৯ই মে মঙ্গলবার র্যাব-৪ এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজাকার, আলবদর, আলশামসসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর ও সহযোগীরা এদেশের নিরীহ জনগণের উপর হত্যা, ধর্ষণ ও লুন্ঠনসহ একাধিক মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত ছিল।
মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হতে দন্ডপ্রাপ্ত, ওয়ারেন্টভূক্ত ও বিচারাধীন মামলার পলাতক যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতারের বিষয়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলা নম্বর ০৮/২০১৯ এর কয়েকজন পলাতক যুদ্ধাপরাধী বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানা এলাকায় অবস্থান করছে, প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল আসামীদের কার্যক্রম ও গতিবিধি পর্যালোচনা করে তথ্য সংগ্রহপূর্বক গত ০৮ মে ২০২৩ তারিখ রাতে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে উক্ত বিচারাধীন মামলার পলাতক মোঃ ফজলুল হক খান @ ফজলুর রহমান @ ফজলু খলিফা (৬৯), জেলা-বরগুনা, মোঃ ইউছুফ আলী @ ইউসুফ মুন্সী (৭৪), জেলা-বরগুনা, মোঃ রাজ্জাক @ আঃ রাজ্জাক (৬৮), জেলা-বরগুনা, নামীয় ০৩ জন মানবতাবিরোধী অপরাধীকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
ঘটনার সূত্রমতে জানা যায় যে, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চালাকালে রাজাকার কমান্ডার আব্দুল মান্নান হাওলাদার এর নেতৃত্বে ফজলুল হক, ইউছুফ আলী, আবদুর রাজ্জাক, হযরত আলীসহ ৪-৫ জন আসামী বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার হোগলাপাশা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা ও নির্যাতনসহ তাদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং একাধিক নারীকে ধর্ষণ করে। উক্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২০১৭ সালের ২২ মে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান বাদী হয়ে পাথরঘাটা জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন যার নম্বর সিআর-১২২/২০১৭। মামলার এজাহারে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৯ জুন মামলার অন্যতম সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন অধিকারীকে হত্যার উদ্দেশ্যে আসামীরা সংঘবদ্ধ হয়ে তার গলায় ছুরি চালায়। পরদিন ৩০ জুন চিত্তরঞ্জন অধিকারীকে হত্যা করতে না পেরে তার আপন চাচা সুরেন্দ্র নাথ অধিকারীকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলে। অতঃপর ১৮ আগস্ট বাদীর বাবা মতিয়ার রহমান ও অন্যতম সাক্ষী মনমথ রঞ্জন মিস্ত্রীর বাবা মনোহর মিস্ত্রী এবং চাচা কর্নধর মিস্ত্রীকে দিনের বেলা প্রকাশ্য দিবালোকে পাক হানাদার বাহিনীর উপস্থিতিতে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়াও পরবর্তীতে মনোহরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে লুটপাট ও ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Leave a Reply