1. : admin :
পলিথিন-প্লাস্টিকে সয়লাব পদ্মা পাড়, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য - দৈনিক আমার সময়

পলিথিন-প্লাস্টিকে সয়লাব পদ্মা পাড়, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

সায়েম খান, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
    প্রকাশিত : সোমবার, ৮ মে, ২০২৩
পদ্মাপাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ও নিজের মনকে একটু প্রশান্তি দিতে পদ্মায় আসেন ভ্রমণপিপাসুরা। তেমনই একটি যায়গা মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের মিনি কক্সবাজার খ্যাত কুশিয়ারচরের কালিতলার পদ্মা পাড়।
তবে এ পদ্মা নদীর পাড়ে এখন পলিথিন আর প্লাস্টিকে সয়লাব। যত্রতত্র এ প্লাস্টিকে শুধু পদ্মার পরিবেশই নষ্ট হচ্ছে না সঙ্গে সঙ্গে নদীতীরবর্তী এলাকার জীববৈচিত্র্যও রয়েছে হুমকির মুখে।
কুশিয়ারচর পদ্মার পাড়ের চরে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি স্থানে পানি, ড্রিংকসের বোতল, রেস্টুরেন্টের বর্জ্য, চিপসসহ নানা অপচনশীল পলিথিন ও নানা পাত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। স্থানীয় রেস্টুরেন্ট ও ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোর কারনে সার্বাধিক নোংরা হচ্ছে পদ্মাপাড়।
তবে স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংগঠন মাঝে মাঝে পরিচ্ছন্নতা অভিযান করলেও স্থায়ী কোনো পরিচ্ছন্ন কর্মী না থাকায় ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অসচেতনতার কারণে দিনদিন সৌন্দর্য হারাচ্ছে এই মিনি কক্সবাজার খ্যাত পদ্মারপাড়।
কুশিয়ারচর পদ্মা পাড়ের ভাসমান রেস্টুরেন্টের মালিক মো. জাহিদ মোল্লা বলেন,  আমার রেস্টুরেন্টের ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য আমি নির্দিষ্ট গর্ত করে দিয়েছি। তবে অন্যান্য ব্যবসায়ী এবং অসচেতন ভ্রমনার্থীদের কারণে এতো ময়লা দেখা দিয়েছে।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা সোহেল নামের একজন আক্ষেপ করে বলেন, পদ্মার পাড় এতো সুন্দর একটি জায়গা সবকিছুই বেশ সুন্দর তবে নদীর পাড়ে অনেক প্লাস্টিক বর্জ্য যেগুলো আমাদের খুব বিরক্ত করে। অবশ্যই এগুলো পরিষ্কার না রাখলে জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবেনা।
মানিকগঞ্জ থেকে আসা আল-আমীন নামের অন্য এক দর্শনার্থী বলেন, আমরা এখানে একটু সুন্দর পরিবেশ, নিরবচ্ছিন্ন সৌন্দর্য, প্লাস্টিকমুক্ত নদীর খোঁজে আসি কিন্তু এসে দেখি বিপরীত চিত্র। তবে এত সুন্দর একটি জায়গায় এ সমস্যাগুলোর জন্য স্থানীয়দের আরও সচেতন হওয়া দরকার।
হরিরামপুর উপজেলা বিডি ক্লিনের সমন্বয়ক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত প্লাস্টিকের বর্জ্য জমায় নদীতে থাকা প্রাণী হুমকিতে রয়েছে। আমরা বিডি ক্লিনের পক্ষ থেকে জেলা উপজেলার বিভিন্ন স্থানেই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম করে আসছি। কালিতলা পদ্মার পাড়েও আমরা কিছুদিন আগে পরিষ্কার করেছি। কিন্তু ভ্রমনার্থী এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সচেতন না হলে কোনভাবেই পরিষ্কার রাখা সম্ভব না।
হরিরামপুর উপজেলার পরিবেশবাদী সংগঠন হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গের সাধারণ সম্পাদক  প্রণব পাল বলেন, প্লাস্টিক পলিতিন এরকম নানা অপচশীল বর্জ্য নদীকে মারাত্মকভাবে দূষিত করে। এসব অপচশীল বর্জ্যর জন্য নদীতে থাকা জলজ প্রাণী হুমকির মুখে রয়েছে।
তিনি আরোও বলেন, কয়েকবছর আগে হরিরামপুরের আন্ধারমানিক পদ্মার পাড়ে এরকম একটি চর জেগেছিলো তখন স্থানীয়রা নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার জন্য ডাস্টবিন ও ব্যনার তৈরি করে দিয়েছিলেন। যার কারনে পদ্মা দূষণ অনেকটা কমে গিয়েছিলো। কুশিয়ার চরের স্থানীয়রাও যদি এরকম ডাস্টবিন এবং ব্যনার তৈরি করে সচেতনা তৈরি করতে পারে তাহলেই পদ্মা দূষণ কমবে।
উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী বনি ইসলাম রুপক বলেন, কুশিয়ারচর পদ্মায় চর জেগে ওঠার কারনে অনেক দর্শনার্থীরা ঘুরতে আসে। কিন্তু কিছু অসচেতন দর্শনার্থী ও ব্যবসায়ীদের কারণে পদ্মার পাড় দূষিত হচ্ছে। আমি কুশিয়ারচর পদ্মার পাড়ে গেলেই সকল ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা রাখার জন্য এবং পদ্মার পাড় পরিষ্কার রাখার জন্য অনুরোধ করি।
হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান বলেন, কুশিয়ারচরে রেস্টুরেন্ট এবং ভাম্যমান দোকানের কারনে যদি পদ্মার পাড় দূষিত হয় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com