ঢাকার ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের গোয়ালদী গ্রামের কৃষক আনিসুর রহমান। ধারদেনা করে এ বছর ৫০ শতাংশ জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। তার আশা ছিল এ জমির ধান দিয়েই চার সদস্যের পরিবারের সারা বছর পার হয়ে যাবে। কিন্তু ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসের আগুনের তাপে পুড়ে গেছে তার সব ধান। এখন কীভাবে পরিশোধ করবেন ঋণের টাকা আর কীভাবেই চলবে পরিবার? এ আক্ষেপ নিয়ে বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকালে পুড়ে যাওয়া ধানক্ষেতের পাশে কান্না করছিলেন আনিসুর রহমান।
২২ অক্টোবর কৃষক আনিসুর রহমান বলেন, আমি যে অভিযোগ করেছি, আমাকে ওই অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য হুমকি প্রদান করতেছে ওই ভাটার মালিক,অভিযোগ যদি আমি তুলে না নেই আমাকে মামলা দিয়ে জেল খাটানোর কথা বলেছে, আমি আমার এখন ধানের ক্ষতিপূরণের চেয়ে নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছি ।
শুধু তিনিই নন, তার মতো ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের গোয়ালদী গ্রামের আবদুল আহাদ বাবু, দারোগ আলী, কবির হোসেন, ডাউটিয়া গ্রামের ওয়ারেছ আলী, আবদুল মোন্নাফ, কালামপুর গ্রামের মোস্তাক হোসেন, আবদুল মান্নানসহ কয়েকজন কৃষকের ১৮ বিঘা জমির আমন ধান ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়া ও গ্যাসের আগুনে পুড়ে গেছে। ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে কৃষকের পক্ষে আবদুল আহাদ বাবু রবিবার (১৫ অক্টোবর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের ডাউটিয়ায় এক, দুই ও তিন ফসলি জমিতে সাতটি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে ইউএসএ নামে একটি ইটভাটায় এক মাস থেকে ইট পুড়ছে। ১০ দিন আগে টানা চার-পাঁচ দিন বৃষ্টির ফলে ইটভাটার চুল্লির আগুন হঠাৎ বন্ধ করে বিষাক্ত গ্যাস ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই গরম বাতাস যেদিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সেই অংশের ধানক্ষেতই পুড়ে গেছে। এতে ডাউটিয়া, কালামপুর ও গোয়ালদী গ্রামের কয়েকজন কৃষকের প্রায় ১৮ বিঘা জমির আমন ধান পুড়ে গেছে। এখন শুধুই ধানের শীষে চিটা দুলছে।
Leave a Reply