টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ৫নং ছিলিমপুর ইউনিয়নের শাহানশাহগঞ্জ (বরুহা) বাজার থেকে গ্রাহকের প্রায় ১২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে এনজিও কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। সে পোড়াবাড়ী ইউনিয়নের খারজানা গ্রামের মিয়া চানের ছেলে। ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ও পাড়া মহল্লার প্রায় সারে ৪ শো সহজ সরল মানুষ ও গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতারণার ফাঁদ পেতে সঞ্চয়ের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ‘নাইন স্টার সমবায় সঞ্চয় সমিতি’ নামে বেসরকারি এনজিও কর্মকর্তার পরিচালক শফিকুল। সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া ও বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে গ্রামের নিরীহ মানুষগুলোর কাছ থেকে এ টাকা আদায় করেন তারা। এখন সেই সমিতির দরজায় তালা ঝুলছে। গত মার্চ মাসের ২ তারিখে পালিয়ে যায় সে। এতে পথে বসার উপক্রম হয়েছে শত শত পরিবার। দুইটি ইউনিয়নের নিরীহ বাসিন্দাদের নিঃস্ব করেছে এই “নাইন স্টার” যার সমবায় অধিদপ্তর থেকে নেয়া রেজিস্ট্রেশন নং-২৮৪। এরই ধারা বাহিকতায় গত সোমবার (১লা মে) “নাইন স্টার” এনজিও’র মীর ইয়াছিন নামে এক পার্টনারকে ধরে দোকানের ভিতর তালাবদ্ধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা ও গ্রাহকেরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তার সাথে কথা বলে জানা যায় এই সমিতির সাথে ৯জন পার্টনার আছে। তারা হলেন, সমিতির সভাপতি পল্লীচিকিৎসক সফিকুল ইসলাম, পরিচালক সফিকুল ইসলাম (পলাতক), কার্যকরী সদস্য পল্লীচিকিৎসক আলমগীর, হযরত, সোহেল, শহর, ফজলু পুলিশ, মীর ইয়াছিন ও একজন অজ্ঞাত। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, আলমগীর, হযরত ও ফজলু পুলিশ এনজিও’র পরিচালক সফিকুলের সাথে মতের অমিল হওয়ায় তারা তাদের সদস্যপদ ও শেয়ারের টাকা বুঝে নিয়ে গত ০৬/০৮/২০২২ইং তারিখে আলমগীর হোসেন ও হযরত আলী এবং ২৭/০২/২০২১ এ ফজলু পুলিশ দায়মুক্তি ও টাঙ্গাইল জজকোর্ট হতে অঙ্গিকারনামার মধ্য দিয়ে তাদের সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়। যেখানে সমিতির সিল ও পরিচালকের স্বাক্ষর রয়েছে। সেখানে লেখা অংশিদারিত্বের টাকা বুঝিয়া দিয়া নাইন স্টার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি হতে তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর সমিতিটির যাত্রা শুরু হয়েছিলো। ঘটনার দিন মীর ইয়াছিন উক্ত তিন ব্যক্তির নাম বলায় তারা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এবং গ্রাহকরা যাতে তাদের পাওনা টাকা বুঝিয়া পায় সে জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনের সৃদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
এদিকে জিরাতন বেওয়া যিনি ভিক্ষাবৃত্তি করে সারা জিবনের ১লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ওই এনজিওতে ডিপোজিট করে রেখেছিলো, আয়মনা বেগম তিনিও ভিক্ষা করে জমানো ১লাখ ৮০ হাজার টাকা রেখেছিলো, এভাবে কালু, ছালাম, সাহাদত, মনি, লালভানু’সহ অসংখ্য গ্রাহক প্রতারিত হয়ে আজ তারা দিশেহারা। সংবাদ পাওয়ার পর এদের কেউ কেউ স্ট্রোক করে সদর হাসপাতলে চিকিৎসা নিয়েছে। আবার কেউ টাকার শোকে আত্বহত্যার পথ বেছে নিতে চাচ্ছে।
এ বিষয়ে ছিলিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুজায়েত হোসেন বলেন, “আমার ধারনা সমিতির যে কার্যকরি কমিটি আছে এরা বিষয়টি জানে। এবং পরিকল্পিত ভাবেই সফিকুলকে সরিয়ে রাখা হয়েছে। আর সফিকুলের স্ত্রী’র সাথে তার যোগাযোগ নাই এটা আমার বিশ্বাসের হয়না। তবে ঘটনা যাই ঘটুক গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে হবে। এব্যপারে আমি পুলিশ প্রশাসন ও ডিসি মহদয়ের দৃষ্টিআকর্ষন করছি।”
এব্যপারে টাঙ্গাইল সদর থানার এসআই আবুল বাসার বলেন, এ বিষয় নিয়ে থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বিষটি আমি জানি এবং আগামী শনিবার শালিশী বৈঠকের মাধ্যমে গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা রয়েছে।
Leave a Reply