1. : admin :
টাঙ্গাইলে সমবায় ব্যাংকের ১১ কোটি টাকা আত্মসাত চেয়ারম্যান কুদরৎ এ এলাহির - দৈনিক আমার সময়

টাঙ্গাইলে সমবায় ব্যাংকের ১১ কোটি টাকা আত্মসাত চেয়ারম্যান কুদরৎ এ এলাহির

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
    প্রকাশিত : বুধবার, ২২ মার্চ, ২০২৩
টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ব্যাংকের চেয়ারম্যান কুদরৎ এ এলাহির বিরুদ্ধে। এছাড়া সমবায় ব্যাংকের আওতাধীন পৌর সুপার মার্কেটে দোকান বরাদ্দ দেয়ার কথা বলেও টাকা নেয়ার অভিযোগ আছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও পদে বহাল আছেন তিনি। তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে ব্যাংকের চেয়ারম্যান কুদরৎ এ এলাহির বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। সঞ্চয় ফেরত পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন গ্রাহকরা।
টাঙ্গাইল জেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে ১৯৮০ সালে এই সমবায় মার্কেট তৈরি করেন সমবায় অধিদপ্তরের ১৫৫ জন সমবায়ী গ্রাহক। জামানতের টাকায় করা মার্কেটটির দালিল সূত্রে মালিক তারাই। তবে মার্কেটটি পরিচালিত হয় টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ব্যাংকের তত্তাবধানে।
গ্রাহকদের অভিযোগ, কুদরৎ এ এলাহি টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ব্যাংকের সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর সমিতি ও মার্কেটের দুরাবস্থা। আধুনিকায়নের নামে সমবায় সুপার মার্কেট থেকে পুরাতন ব্যবসায়ীদের বের করে দেয়া হয়েছে।২০১৬ সালে পুরাতন মার্কেটটি ভেঙে নতুন মার্কেট তৈরির উদ্যোগ নেয় সমবায় কর্তৃপক্ষ। এরপর ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও নতুন ভবন হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়ার কথা বলে সমবায় ব্যাংক থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন ব্যাংকের সভাপতি। কিন্তু সেই টাকা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়নি। এনিয়ে মামলাও করেছেন ব্যবসায়ীরা। ভবনের কাজও বন্ধ রয়েছে। সমবায় ব্যাংকে জমা রাখা টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় নিঃস্ব হয়েছেন ১৫৫ গ্রাহক। এরমধ্যে ১৯ জন মারা গেছেন।
ভুক্তভোগীরা জানান, ৭ বছর আগে টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ব্যাংকের সভাপতি কুদরৎ এ এলাহীর মেয়াদ শেষ হয়েছে। তারপরও তিনি স্বপদে বহাল আছেন। তার সময়ে নামে বে-নামে সমবায় ব্যাংকের প্রায় ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছেন অডিটকারীরা। তার নামে যে মামলা হয়েছে, সেই মামলা চালানোর খরচ হিসেবে ব্যাংক থেকে আরও ৩ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।
টাঙ্গাইল সমবায় ব্যাংকের গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ছানোয়ার হোসেন জানান, গ্রাহকদের অভিযোগের পরেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না। এসব বিষয়ে সমবায় ব্যাংকের সভাপতি কুদরৎ এ এলাহীর বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। গ্রাহকদের অভিযোগ জানানোর পরও কুদরৎ এ এলাহীর বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি সমবায় অধিদপ্তর।
সূত্র জানায় টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ব্যাংকের অবৈধ সভাপতি কুদরৎ এ এলাহি বিভিন্ন সময় বির্তকিত হিসাব পরিচালনা করে ব্যাংকের টাকা সরিয়ে নিয়েছেন। সর্বশেষ অডিট রিপোর্ট থেকে জান যায়, ঠিকাদারকে ধার এবং কোর্ট খরচের নামে প্রায় ৯ কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সমবায় ব্যংকের আওতাধীন পৌর সুপার মার্কেটের দোকান বরাদ্ধের টাকা থেকে আরো কোটি টাকা অবৈধভাবে নিয়েছেন কুদরৎ।৭ বছর আগে কুদরত এ এলাহির কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও নানা জায়গায় উপটৌকন দিয়ে তিনি স্বপদে বহাল আছেন তিনি। মূলত, স্বপদে বহাল থেকে সমবায় ব্যাংক থেকে বিশাল অংকের টাকা তছরুপ করার উদ্দেশ্য  নিয়েই এমন অপকর্ম করে যাচ্ছেন কুদরৎ এ এলাহি। অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে তাকে স্বপদে বহাল রাখতে কাজ করছেন সমবায় অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারাও। এমন বক্তব্যও রাহেলা জাকিরের অভিযোগে উঠে আসে।অভিযোগে আরো বলা হয়, কুদরৎ এ এলাহি তার পর্ষদকে পাশ কাটিয়ে চাচাতো বোন জামাই একাউন্টস দিদারুল ইসলামকে দিয়ে সমবায় ব্যাংকের একটি অবৈধ ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছেন। এ হিসাব পরিচালনা করেন কর্মচারি দিদার এবং কুদরৎ নিজে। যার হিসাব হিসাব নং- ০২০০০১৮৯৫৯১০। গত ৫ মাসে এ হিসাব থেকে কুদরত প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন নিজের ব্যক্তিগত কাজে। আইন লঙ্ঘন করে দিদারকে সাইনিং পাওয়ার দেওয়ায় লেন-দেন করতে জবাবদিহি করতে হয় না সভাপতিকে। কুদরৎ সভাপতি হিসেবে সমবায় ব্যাংকের তহবিল থেকে ঠিকাদারকে হাওলাত দিয়েছেন ৬ কোটি ৮৫ হাজার ৬শত ৩৪ টাকা। অথচ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তাদের ৫ বছর আগের পাওনা এখনো বুঝে পায়নি।বিভিন্নভাবে মামলা পরিচালনার জন্য কুদরৎ এ এলাহি আইনজীবী খরচ হিসেবে ৩ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। বর্তমানে সমবায় ব্যাংকটির নামে একটি মামলা চলমান। যা পুরাতন দোকানদারা দায়ের করেছেন। এ মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। এর বাইরে সভাপতি নিজে স্বপদে থাকা নিয়ে দেশের শীর্ষ আইনজীবীদের নিজের পক্ষে ব্যবহার করেছেন। পদে থাকা নিয়ে মামলার রায়ে কুদরৎ এলাহি হেরে যান। পরে চেম্বার কোর্টে রায় স্থগিত করে এখনো স্বপদে বহাল আছেন কুদরৎ  এলাহি

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com