ছেঁড়া জাল, স্যান্ডেল ও রশিসহ নানা ধরনের বর্জ্য ভেসে এসেছে। যা বালিয়াড়ির কয়েক কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। সমুদ্র নিম্নচাপের কারণে এসব বর্জ্য ভেসে এসেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ইতিমধ্যে এসব বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (৩১ মার্চ) দিবাগত রাতে জোয়ারের সময় এসব বর্জ্য ভেসে আসার সত্যতা নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসনের বীচকর্মী বেলাল হোসেন।
সৈকতের কবিতা চত্বর পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত অনুমানিক আড়াই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বালিয়াড়িতে দেখা মিলেছে এসব বর্জ্য। যার বেশিভাগ প্লাস্টিকের বোতল ও অন্যান্য সামগ্রী। যার সাথে ছেঁড়া জাল, রশি, কাঁচের বোতল, গাছের গুড়ি, স্যান্ডেলসহ অন্যান্য বর্জ্য রয়েছে।
সৈকতের লাইফ গার্ডকর্মী সৈয়দ নুর জানান, গেল বুধবার অসংখ্য মৃত জেলিফিল, বৃহস্পতিবার ২টি মৃত ইরাবতি ডলফিল ভেসে আসার পর ব্যাপক হারে বর্জ্য ভেসে এল। যার কারণে বালিয়াড়িতে পড়ে থাকা বর্জ্যে সৌন্দর্যহীন হয়ে পড়েছে সৈকত। একই সঙ্গে ছড়াচ্ছে দূর্গন্ধ। যা দেখে বিব্রত হচ্ছে পর্যটকরা।
বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্স ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বেলাল হায়দার পারভেজ জানিয়েছেন, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী থেকে কবিতা চত্বর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় নানা ধরনের সামুদ্রিক বর্জ্য ভেসে আসে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে কক্সবাজার সৈকতের দরিয়া নগর হতে মহেশখালির বিভিন্ন দ্বীপসহ সোনাদিয়া দ্বীপে একই বর্জ্য ভেসে এসেছিল।
তিনি বলেন, এ ধরণের ঘটনা সমুদ্রে নিম্নচাপ, বায়ুপ্রবাহ, পানির ঘূর্ণন, সমুদ্রের পানির গতি প্রবাহসহ সমুদ্র পৃষ্ঠের ধরন উপর ভিত্তি করে সমুদ্র উপকূলের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ভাসমান প্লাস্টিকসহ ও অন্যান্য বর্জ্য জমা হয়।
উল্লেখ্য এই যে এর আগে বৃহস্পতিবার ৩০ মার্চ ২টি মৃত ইরাবতি ডলফিন, বুধবার (২৯ মার্চ), গত বছরের ৩ ডিসেম্বর, ১১ নভেম্বর ও আগস্ট মাসের শুরুতে দুই দফায় অসংখ্য মরা জেলিফিশ সৈকত পাড়ে ভেসে এসেছিলো। একইভাবে গত বছর ৩ দফায় ভেসেছে এসেছে ৪টি বিরল প্রজাতির ডলফিন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ জানিয়েছেন, এসব বর্জ্য অপসারণের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব অপসারণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরে আমরা বঙ্গপোসাগরে একটি ছোট আকারের নিম্মচাপ লক্ষ্য করেছি। এসব নিম্নচাপে জোয়ারের সময় সমুদ্র উপরি পৃষ্ঠের পানি অতি মাত্রায় বেড়ে গিয়ে ফুলে উঠে এবং ঘুর্ণনের ফলে সমুদ্রের ভাসমান বর্জ্য একসাথে জমা হয়ে ভেসে আসে সৈকত পাড়ে।
Leave a Reply