চট্টগ্রামে আনোয়ারা উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের অফিসে নানা অনিয়ম, গ্রাহক হয়রানি,ভুয়া বিল দুর্ণীতি ও গ্রাহকদের ভোগান্তি অভিযোগ এজিএম কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র ও ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগে জানা গেছে, আনোয়ারা উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গ্রাহক সেবা মুখে বলে, মিটার না দেখে অতিরিক্ত ও ভুয়া বিল দালালের মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুতের সকল কার্যক্রম, মিটার সংযোগ, মিটার পরিবর্তন, ট্রান্সমিটার পরিবর্তন, নতুন লাইন সংযোগ, উপকরণ সংগ্রহ, মিটার আবেদন, অভিযোগ দাখিল, বিল পরিবর্তন, খুঁটি স্থানান্তরসহ ইত্যাদি বিষয়াদি নিয়ে পল্লী বিদ্যুতের লোকজনের কাছে গ্রাহকরা জিম্মি হয়ে আছে। এ ব্যাপারে গ্রাহকদের প্রতিকারের কোন ভাষা নেই। গ্রাহকরা কোন অভিযোগ করলে অভিযোগকারীকে উল্টো নতুন ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন ইউনিয়নের এলাকা ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়।বৈরাগ ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চক গ্রামে ১৫ মে রাত ১০ দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ১৬ মে রাত ৮ দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। ১৭ মে ভোর সকাল ৪ টা থেকে রাত ৯ টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। এলাকার ভুক্তভোগী গ্রাহকরা বিদ্যুৎ অফিসের অভিযোগ নাম্বারে, ডিজিএম এবং এজিএমের মুঠোফোন নাম্বারে ২ দিন যোগাযোগ করে কল রিসিভ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এলাকারবাসী পল্লী বিদ্যুৎ হয়রানি অভিযোগে বিষয়টি জানাতে ডিজিএম জসিম উদ্দিন ছুটি থাকার কারণে ভারপ্রাপ্ত ডিজিএমের দায়িত্ব পালন করে এজিএম কামরুল হাসান। পল্লী বিদ্যুৎ ভারপ্রাপ্ত ডিজিএমের দায়িত্ব পাওয়ার পর পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যান / ইলেকট্রিসিয়ান ওপর খারাপ ব্যবহার করতে থাকে বলে কর্মকর্তাদের অভিযোগ।
বৈরাগ ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চক গ্রামে শাকিল নামে এক গ্রাহক জানান, কিছুদিন আগে বিকাল ৪ টার দিকে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বাঁশ পড়ে ট্রান্সফরমার থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের অভিযোগকারী মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে জানালে তাদের জনবল সংকট জানান। এই বিষয়ের ১০-১২জন গ্রাহকরা অভিযোগ নাম্বারের কল দিলে অফিস থেকে জানান রাত ১০টা বেজে গেছে। অফিস থেকে লাইনম্যান পাঠালে কিছু খরচ দিতে হবে। লাইনম্যানের মোটরসাইকেল তেল নেই। বিদ্যুৎ সংযোগ দিলে খরচ দেওয়া হবে বললে লাইনম্যান পাঠাবো। অবশেষে রাত সারে ১০ টার দিকে ১ হাজার টাকা বিনিময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
সোলাইমান নামে এক গ্রাহক জানান,বিদ্যুৎ অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারী আমি বাড়ীতে না থাকা অবস্থায় টাকা খেয়ে কোন অভিযোগ ছাড়া আমার মিটারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। খবর পেয়ে বিদ্যুৎ অফিসের যোগাযোগ করা হলে নতুন সংযোগ দিতে টাকা দাবি করে। কোন উপায় না পেলে টাকা দিয়ে দীর্ঘদিন ঘুরাঘুরি পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া দিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, পল্লী বিদ্যুৎ এজিএম কামরুল হাসান বিরুদ্ধে অফিস ফাঁকি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অফিস চলাকালিন সময়ে চাতরী চৌমুহনী বাজারের ভাড়া বাসায় থাকে। সকাল-বিকাল, রাতে টানা লোডশেডিং ও লাইনে ত্রুটির অজুহাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রেখে তিনি গ্রাহকদের হয়রানি করেছেন।নতুন সংযোগ স্থাপনে উৎকোচ গ্রহণ এবং তার স্বেচ্ছাচারিতার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে গ্রাহকদের অভিযোগ।নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ ফাইল আটকে রেখে ঘুষের টাকা না দিলে মিটার ও তার সংকটের অজুহাত দেখিয়ে সময় পার করছেন মাসের পর মাস।
পল্লী বিদ্যুতের নানা অনিয়ম, গ্রাহক হয়রানি, দুর্ণীতি ও ভোগান্তি বিষয়ে এজিএম কামরুল হাসানের মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার কল দিয়ে সংয়োগ পেলেও তিনি কল রিসিভ করেনি। কল রিসিভ না করার বক্তব্য নেওয়ার সম্ভব হয়নি।
অভিযোগের বিষয় জানতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম মোঃ জসিম উদ্দিন মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এই বিষয়ের চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি -১ এর আনোয়ারা-কর্ণফুলী উপজেলার পরিচালক নাজিম উদ্দীন আহমেদ চৌধুরী জানান, আমাদের কাজটা হচ্ছে গ্রাহকের সেবা করা। আমরা গ্রাহকের সেবায় কাজ কাজ করে যাচ্ছি। ‘ঘূর্ণিঝড় ‘মোখার” আর কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে আমাদের একটু সমস্যা হয়েছে। তবে এজিএম কামরুল হাসান লোকটা মোটামুটি ভাল মানুষ। আমার সাথে প্রতিদিন যোগাযোগ হচ্ছে গ্রাহকের এজিএমকে না পেলে আমাকে কল দিচ্ছে আমি গুরুত্ব সহকারে বিষয়গুলো সমাধান করে দিচ্ছি। বারখাইন ইউনিয়ন ৩দিন বিদ্যুৎ ছিল না।চাতরী কেয়াঘর এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না আমাকে অভিযোগ গুলো জানানো পড়ে সমাধান করে দিয়েছি। আমিও গ্রাহকের প্রতিনিধি ডিজিএম- এজিএম আজকে আছে কাল নেই। আমিও এই এলাকায় মানুষ।গ্রাহকের সমস্যা আমাকে দেখতে হবে। দিনরাত গ্রাহকের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।কেউ যদি এজিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। তাহলে অবশ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply