1. : admin :
রাস্তায় মশাল হাতে লড়বেন ঝন্টু - দৈনিক আমার সময়

রাস্তায় মশাল হাতে লড়বেন ঝন্টু

বিনোদন প্রতিবেদক
    প্রকাশিত : বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

হিন্দি ছবির প্রভাব ক্রমশ পরিলক্ষিত হচ্ছে দেশের সিনেমায়। ‘পাঠান’র কারণে একাধিক ছবি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। এবার শাহরুখ খানের ‘জাওয়ান’র আগমনে পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে ‘অন্তর্জাল’র মতো বড় আয়োজনের ছবি। এ ছাড়া আরও একাধিক সিনেমার টিম রয়েছে দুশ্চিন্তায়। যদিও কেউ সেভাবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলছেন না। কিন্তু ব্যতিক্রম দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। দেশের প্রেক্ষাগৃহে হিন্দি ছবি প্রদর্শনের বিরুদ্ধে তিনি শুরু থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন। আগে তার ছবি না থাকলেও এবার তিনি নিজেও হিন্দির শিকার হতে চলেছেন। কারণ আগামী ৮ সেপ্টেম্বর তার পরিচালিত ‘সুজন মাঝি’ ছবিটি মুক্তি পাবে। আর সেদিন ‘জাওয়ান’ও মুক্তি পাওয়ার কথা। তাই আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছেন ঝন্টু। তার বজ্র হুংকার, যদি হিন্দি সিনেমাটি মুক্তি পায়, তিনি মশাল হাতে প্রতিবাদে বেরিয়ে পড়বেন। গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু বলেছেন, ‘আমরা চাই না বিজাতীয় ভাষার ছবি মুক্তি পাক। ইংরেজি আমাদের পড়ানো হয়, এটা একটা আন্তর্জাতিক ভাষা, সুতরাং ইংরেজি ছবি আসলে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু এই ছবি (জাওয়ান) আসলে আমরা আন্দোলন করবো। কেউ যদি না যায়, আমি একা সিনেমা হলের সামনে গিয়ে মশাল নিয়ে দাঁড়াবো।’ এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রদর্শক সমিতির নিয়মও দেখালেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু। তার মতে, “আমাদের প্রদর্শক সমিতি একসঙ্গে দুটোর বেশি ছবি মুক্তির অনুমতি দেবে না। দুটো ছবি মুক্তির জন্য কাগজপত্র সই হয়ে গেছে। একটি মুশফিকুর রহমান গুলজারের ‘দুঃসাহসী খোকা’ এবং দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর ‘সুজন মাঝী’। কোনো শক্তি ওই ছবিটিকে মুক্তি দিতে পারবে না। এখন যদি সরকার বলে যে, চলবে। তাহলে তো আমার কিছু করার নাই। তবে আমার বিশ্বাস, হিন্দি-উর্দু ছবি দিয়ে বাংলা ছবিকে আঘাত করবে না সরকার।” ঝন্টুর ঝাঁজালো বক্তব্য শুনে সিনেমাপ্রেমীদের রক্তে উষ্ণতা আসার কথা। কেননা তার সব কথার মূলে দেশের সিনেমার স্বার্থই রয়েছে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে বিপরীত চিত্র। সম্প্রতি তার পরিচালিত ‘সুজন মাঝি’ ছবিটির ট্রেলার প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যায়, পুরনো বাংলা ছবির আদলেই গল্প সাজিয়েছেন তিনি। পার্থক্য কেবল চিত্রায়নে; যেটার কিঞ্চিৎ উন্নতি ঘটেছে ক্যামেরার বদৌলতে। কিন্তু সামগ্রিক কনটেন্ট হিসেবে এটি যে অত্যন্ত নিম্নমানের, তা দর্শক-সমালোচকদের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট। ট্রেলারটি দেখে দর্শকদের কেউ বলেছেন, ‘ওরা কি এখনও প্রাচীন যুগে আছে?’, কারও মন্তব্য, ‘সি গ্রেড মুভির এর চেয়ে ভালো উদাহরণ হতে পারে না’, আবার কেউ তাচ্ছিল্যের সুরে বললেন, “জাওয়ান’ মুভিটা ঝুঁকিতে পড়ে গেলো।’ ঝন্টু জানিয়েছেন, একটি স্যান্ডেলকে ঘিরে তিনি এই সিনেমার গল্প লিখেছেন। তার ভাষ্য, “আমাদের দেশটা পুরোটাই গ্রামের, হাজার হাজার গ্রাম। আমি মনে করি গ্রামের ছবিই মানুষ সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে। এইজন্য ‘সুজন মাঝি’ বানিয়েছি। শুনলে আপনারা অবাক হবেন, এই ছবির গল্পটা একটা স্যান্ডেলের ওপর লিখেছি। নায়ক যখন ছোট, নায়কের মায়ের সঙ্গে খলনায়ক খুব দুর্ব্যবহার করে, স্যান্ডেল দিয়ে প্রচণ্ডভাবে মারে। নায়ক সেই স্যান্ডেল রেখে দেয়, তারপর কী করে, সেটা বলবো না। নাহলে মানুষ হলে যাবে না।” কিন্তু ট্রেলার নিয়ে দর্শকের প্রতিক্রিয়ায় এতটুকু স্পষ্ট, এমন ছবি তারা দেখতে ইচ্ছুক নন। যখন বিশ্ব সিনেমা গল্প, নির্মাণ ও অভিনয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করছে, তখন ঢালিউডের কিছু নির্মাতা এখনও সেই সত্তর-আশির দশকের উদাহরণ টেনে ওই আঙ্গিকে ছবি নির্মাণ করছেন; এটিকে সময়ের চেয়ে পিছিয়ে পড়াই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর মতো বর্ষীয়ান নির্মাতারা যদি সময়ের সঙ্গে নিজেদের আপডেট করে মানসম্পন্ন সিনেমা বানাতে পারতেন, তাহলে তাদের হিন্দি ছবি বিরোধী আন্দোলন আরও যৌক্তিক এবং কার্যকর হতো বলেও অভিমত অনেকের।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com