উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র গরম ও রোদের কারণে এখানকার অনেক মরিচ ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সকাল থেকেই তপ্ত থাকছে ফসলের মাঠ। খরার কারণে আম-লিচুর গুটি শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে যাওয়ায় কোথাও কোথাও নলকূপেও উঠছে না পানি। ধানের এ সময়টাতে জমিতে পানি থাকতেই হয়। গাছের গোড়া শুকিয়ে গেলে আর্দ্রতার অভাবে ধান চিটা হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে মরিচ চাষিরা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। তীব্র তাপদাহের কারনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মরিচ ক্ষেত।
গোপীনাথপুর ইউনিয়নের মো. নাহিদ নামের এক কৃষক বলেন, অনেক আশা নিয়ে ২১ শতক জমিতে মরিচ চাষ করেছি। কিন্তু তীব্র রোদে মরিচের গাছ রক্ষা করা কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে।
ধুলশুরা ইউনিয়নের জুলমত আলী বলেন, ২০ শতক জমিতে মরিচ চাষ করেছি। কিন্তু মরিচের ফুল আসলেও তীব্র দাবদাহের কারণে ফুলগুলো লালছে বর্ণ ধারণ করে ঝড়ে পড়ছে।
বাল্লা ইউনিয়নে শরফদিনগর গ্রামের মানিক মিয়া বলেন, এ রকম গরম যদি অব্যাহত থাকে সেক্ষেত্রে মরিচ গাছ মরে যাবে। আমরা রাতে জমিতে সেচ প্রদান করার চেষ্টা করছি। কারণ দিনের বেলায় মাটি প্রচণ্ড গরম থাকে। দিনে জমিতে সেচ দিলে মরিচ গাছ মরে যেতে পারে।
বাল্লা ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামের মন্টু ফকির বলেন, আমি এইবার ৪২ শতাংশ জমিতে মরিচ চাষ করছি। আমার পুরা ক্ষ্যাত রোইদের জন্যে নষ্ট হয়ে যাইতাছে। রাতে মেশিন দিয়ে পানি দিলে গাছ তাজা থাকে কিন্তু দিনের বেলায় রৌইদের কারনে ফুল পইরা যায়। কি করুম কোন কিছু বুঝতাছি না। গত সিজনে প্রতিদিন মরিচ বেচছি (বিক্রি করি) কিন্ত এইবছর প্রতি সপ্তাহেও বেচপের পারতেছিনা। এহন আল্লাহ-ই যদি আমাগো রক্ষা করে।
হরিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, সারাদেশে চলমান প্রচন্ড তাপদাহে মাঠে দন্ডায়মান ধান, মরিচ, পাট, ভুট্টা, তিলসহ সকল ফসলের ফলনে বিরুপ প্রভাব পরার আশংকা রয়েছে। বিশেষত উচ্চ তাপমাত্রার কারণে সবচেয়ে মরিচ গাছের ক্ষতি হতে পারে। এক্ষেত্রে এই অবস্থায় কৃষকদের করণীয় সম্পর্কে লিফলেট বিতরণ ও বিভিন্ন ব্লকে উঠান বৈঠক এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া উপজেলা কৃষি অফিস মাঠকর্মীদের নিজ নিজ ব্লকে উপস্থিত থেকে মাঠ ফসলের মনিটরিংসহ সার্বক্ষনিক কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করার নিদের্শনা প্রদান করা হয়েছে ।
Leave a Reply