1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. : admin :
নারী উদ্যোক্তা দিবস উপলক্ষে রিপা'র মুক্ত মতামত  - দৈনিক আমার সময়

নারী উদ্যোক্তা দিবস উপলক্ষে রিপা’র মুক্ত মতামত 

নিজস্ব প্রতিবেদক
    প্রকাশিত : শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৩
আমরা নারীরা নিজেকে  নারী উদ্যোক্তা হিসেবে দাবি করি। কিন্তু আমার মতে অনেকেই জানেননা আসলে উদ্যোক্তা কি এবং  নারী উদ্যোক্তা কাকে বলে? আমার মতে প্রকৃতঅর্থে উদ্যোক্তা ও  নারী উদ্যোক্তা তাঁরা যাদের মধ্যে নিন্মলিখিত গুণাবলী লক্ষ্য করা যায়।
১. নারী যখন শত  বাঁধা অতিক্রম করে  নিজস্ব গুনে ও  কর্মের মধ্য দিয়ে  আত্মবিশ্বাস নিয়ে দূরন্ত গতিতে  এগিয়ে  যাওয়ার জন্য   তৈরি হয়, তখনই একজন নারীকে  নারী উদ্যোক্তা বলা হয়।
২.নারী সমাজ  চার দেয়ালে বন্দী না  থেকে অথবা   পর্দার আড়ালে থেকেও নিজের কর্মদক্ষতা  সমাজের সামনে তুলে ধরে  তাদের কে বলেথাকি  নারী উদ্যোক্তা ।
৩. একজন নারী তাঁর  নিজস্ব গুণগত টেকসই  তৈরি  পণ্য বাজারজাত করণ  করার মতো  অবস্থান তৈরি  করতে পারাকেই  নারী উদ্যোক্তা বলে।
৪. একজন নারী শুধু নিজেই কাজ শিখে বসে না থেকে সমাজের আরো নারীকে উৎসাহিত করে প্রশিক্ষণ দিয়ে  স্বাবলম্বী ও  কর্মসংস্থান  এর ব্যবস্থা করতে সক্ষম  হয়েছে তাকে বলে নারী উদ্যোক্তা।
৫. নিজের মোড়ক জত  পন্য বাজার জাত করন এবং  দেশের বাহিরে ও  বিক্রি  করার মতো অবস্থান করতে পেরেছেন যারা তারাই নারী উদ্যোক্তা।
৬. যিনি নিজ পরিবার ও আশে পাশের  মানুষ  গুলোর অবস্থান সম্পর্কে জেনে  তাদেরকে  সহযোগীর হাত বারিয়ে দিয়ে  ও কর্মদক্ষতা  সম্পূর্ণ  করে অর্থনৈতিক ভাবে  আত্মনির্ভরশীল করে  তুলেছে তারাই নারী উদ্যোক্তা।
৭. নিজ  জেলা ও  উপজেলার সরকারি এবং   বে সরকারি অফিস গুলো নিজের তৈরি পণ্য  প্রচারে ও গুণগত  মানে  প্রচারে  এগিয়ে আছে পাশাপাশি   তাদের বিভিন্ন  অনুষ্ঠানে নিজস্ব  তৈরি  পণ্য  অর্ডার পেয়ে   ১০০-২০০ সংখ্যক  পণ্য  তৈরি করে সরবরাহ করার
ক্ষমতা রাখে   তাকেই নারী উদ্যোক্তা বলে।
৮. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পেইজ বা  গ্রুপ  খুলে নিজের পণ্যের  পরিচিতি বৃদ্ধি করা ও বিভিন্ন  নারীদের পণ্য  প্রচারনা বৃদ্ধি করা সেই সাথে   সকলের পণ্যকে  প্যা কেজিং ব্রাইডিং করে  দেশের বাহিরে সেল সেন্টার তৈরি করার পরিবেশ তৈরি  করাকে নারী  উদ্যোক্তা বলে।
পরিশেষে আমি বলতে চাই, যে  পণ্যটি আপনি জনসম্মুখে প্রচারে আনবেন, তাহা  উৎপাদিত যে কোন পণ্য হোক না কেনো। সে পণ্য হতে পারে  পোশাক, খাদ্য, কুটির বা   হস্তশিল্প যাহাই হোক তাহা   অবশ্যই নিজস্ব পণ্য   তৈরি হতে হবে এবং  আপনার প্রশিক্ষিত    উদ্যোক্তা থাকতে হবে নিন্মে ১০-২০ জন। তাহলেই আপনি নিজেকে একজন  নারী উদ্যোক্তা দাবি করতে পারবেন।  এমনো অনেক মহিলা রয়েছেন যার  তত্ত্বাবধানে  নারী উদ্যোক্তা  ১০০-১৫০ জনের উর্ধ্বে  নারী কর্মী  রয়েছে।।
আমি নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন তল্লা এলাকায় বসবাস করি। শত প্রতিকুলতা পেরিয়ে অনেক প্রশিক্ষণ নিয়ে  একজন দক্ষ কর্মী হয়েও নিজেকে এখনো নারী উদ্যোক্তা দাবী করতে সাহস পাই না। আমি কুটির শিল্প, হস্তশিল্প, কারুশিল্প, পোশাক নিয়ে কাজ করি। এ ছাড়া সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বপ্ন যাত্রা যুব উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি হিসেবে সামাজিক সেবামূলক কাজ করে থাকি। ছিন্ন মূল শিশুদের   জন্য প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্হা চালু করেছি।  বর্তমানে মাত্র  ১৯ জন  নারী কর্মী নিয়ে কাজ করছি । আমি নিজে ডিজাইন করি,  পণ্য  তৈরি করে প্যাকেট করে পেকেজিং করে তাহা শো  রুমে  পাঠাই। সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের  স্কুলে মোট ৯ জন শিক্ষক  রয়েছে। পণ্য বিক্রয়ের জন্য দোকানে আমার  ছেলে ও দুজন সহকর্মী রয়েছে।  তবুও নিজেকে মনে হয় নারী উদ্যোক্তা হতে পারিনি।
আমি  এই পর্যন্ত ২০০০ – ২৫০০ জন নারীকে  বিভিন্ন  প্রশিক্ষণের মাধ্যমে  নারীদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলেছি। অনেককে  কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা   করেছি এখনো করেই যাচ্ছি।
 এই সমাজের  কেউ  কেউ নিজেকে   দাবি করে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে। আমার মতে
তারা যানেন না উদ্যোক্তা কি এবং   নারী উদ্যোক্তার কাজ কি। কিন্তু তাদের প্রচার   দাবীব  বিষয় টা খুব দুঃখজনক।
আমরা যারা  বছরের পর  বছর  প্রশিক্ষণ নিয়ে ও  দিয়ে  সময় ব্যয় করছি এখনো বাজারে টিকে থাকার জন্য প্রাণপন লড়াই  করে কাজ শিখে নিজেকে তৈরি  করেছি এবং  প্রতিনিয়ত তৈরি করছি  আত্মকর্মী  তাও  বলতে পারী না  নিজেকে নারী উদ্যোক্তা হয়েছি।
অথচ অনেকে অতি সহজে  পাইকারি  মার্কেট  থেকে পণ্য কিনে এনে ৫ টাকার পন্য ২৫ টাকা  বিক্রি করছে তারা দাবি করছে নিজেকে নারী উদ্যোক্তা। নিজেকে উদ্যোক্তা দাবী না করে ব্যবসায়ী বলে তাও ঠিক  ছিলো।
কিন্তু তারা নিজেকে প্রচার করে  নারী উদ্যোক্তা। এখানেই আমার প্রশ্ন এবং আক্ষেপ।
আবার কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  পেইজ গ্রুপ খুলে টিকটক করে মনে করে নারী উদ্যোক্তা।   আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই,  ভাই টিকটক আইডিটা বের করা হয়েছিলো বড় বড় কম্পানী গুলো ছোট ছোট ভিডিও করে প্রচার করার জন্য  আপনাদের  ইডিট করে টিকটক করার জন্য  না।  তবে একদিক দিয়ে ভালোই করছে  টিকটক রা  সোস্যাল মিডিয়া দের দারুন লাভ করে দিচ্ছেন নিজেও পাচ্ছেন  কিছু  পারিশ্রমিক।
অবশেষে  বলবো আমরা যারা নিজের  পণ্য তৈরি করে নারী কর্মীর মাধ্যমে  প্যাকেজিং করে বাজার জাত করন করি তাদের কথা ভেবে হলেও  নিজেকে নারী উদ্যোক্তা দাবি  করবেননা প্লিজ। আপনার নিজস্ব কর্ম গুণে প্রশিক্ষণে ও দক্ষতার মধ্য দিয়ে একজন নারী উদ্যোক্তা হয়ে নিজেকে সমাজের সামনে উদ্যোক্তা পরিচয়ে তুলে ধরুন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com