মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের ৩০ নং কুষ্টিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পদ্মায় বিলীনের পথে। ঝুকি নিয়ে ক্লাশ করছে প্রায় দুই শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ। ঝুঁকি পূর্ণ হয়ে পড়েছে বিদ্যালয় ভবন।
সরেজমিনে জানা যায়, পদ্মা যুমনা অববাহিকায় অবস্থিত জেলার শিবালয় উপজেলা। এই উপজেলার পদ্মা অববাহিকায় আরুয়া ইউনিয়নের আরুয়া ও কুষ্টিয়া মৌজায় ১৯২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই বিদ্যালয়টি। সত্তর দশক থেকে অনবদ্য ভাঙনের ফলে ইউনিয়নে প্রায় ৫টি গ্রামের সহস্রাধিক বাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়ে যায়। এই ভাঙনের কবলে পড়ে এখন নদী গর্ভে বিলীনের পথে কুষ্টিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাঙনের কারণে বিদ্যালয়ে গড়ে ওঠছে না কোনো নতুন ভবনও। ২০১৭/১৮ অর্থ বছরে জিও ব্যাগ ফেললে ভাঙন কিছুটা রোধ হলেও নদীতে গ্রাস করেছে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য দেয়া হয় প্লাস্টিকের বেড়া। বর্ষার পানি বৃদ্ধির কারণে প্লাস্টিকের বেড়ার পরিবর্তে নির্মাণ করা হচ্ছে প্রাচীর। বিদ্যালয়ের মাঠের অধিকাংশ নদীতে ভেঙে যাওয়ায় খেলাধূলা করতে পারছে না কোমলমতী শিক্ষার্থীরা।
পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী ফৌজিয়া খান চৈতি জানায়, নদী ভাঙনের ফলে আমাদের বিদ্যালয়ের মাঠের অধিকাংশ নদীতে গেছে। আমরা খেলাধূলা করতে পারি না। ক্লাশের ফাঁকে আমাদের সব সময় ক্লাশ রুমেই বসে থাকতে হয়।
সহকারী শিক্ষক সামচুন নাহার জানান, শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমাদের সব সময় উদ্বিগ্নের মধ্যে থাকতে হয়। কখন কোন শিক্ষার্থী নদীতে পড়ে যায়, এই আতংকে থাকতে হয়। বাচ্চাদের নিয়ে আমরা সব সময় ঝুঁকির মধ্যে থাকি। আমাদের দাবি একটা স্থায়ী বেরি বাঁধের।
প্রধান শিক্ষক মো. শামীনুর রহমান বলেন, ১৯৯৮ সাল থেকেই নিয়মিত ভাঙনের ফলে আমাদের বিদ্যালয়টি বর্তমান অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বিদ্যালয়ের আঙিনার অধিকাংশই নদীতে চলে গেছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য একটা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। তারপরেও বাচ্ছা নিয়ে আমরা সব সময় ঝুকির মধ্যেই থাকি। একটা স্থায়ী বেরি বাঁধ হলে এই এলাকার মানুষ উপকৃত হবে। পাশাপাশি আমার বিদ্যালয়সহ পাশের বাজার, মসজিদ এবং কবরস্থান রক্ষা পেত।
৫টি গ্রামের কোমলমতী শিক্ষার্থীরা এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। তবে স্থায়ী বেরিবাঁধ হলে এলাকাটি ভাঙন রোধসহ বিদ্যসলয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও তিনি দাবী করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দীন জানান, পাটুরিয়া ঘাট হতে মালুচি পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধের প্রসেসিং চলছে। অনুমোদন পেলে আশা করছি ২০২৪ সলের মধ্য শেষ করতে পারব। এছাড়াও কোথাও ভাঙন দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে আমরা সেখানে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
Leave a Reply