1. : admin :
এনিম্যাল সিনেমা বাংলা সংস্কৃতিতে বেমানান - দৈনিক আমার সময়

এনিম্যাল সিনেমা বাংলা সংস্কৃতিতে বেমানান

অনলাইন ডেস্ক
    প্রকাশিত : শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩

 

রানা বর্তমান
সাহ্যিতিক নির্মাতা

শাহরুখ খান, সালমান খানদের পর এবার বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে চলছে, রণবির কাপুর। ‘এনিম্যাল’-এর অগ্রিম টিকিট নিয়ে ভারতে চলছে হই হই রই রই কাণ্ড। কী আছে রণবির কাপুর অভিনীত ছবিটিতে? লিখেছেন রানা বর্তমান ( সাহিত্যিক ও নির্মাতা ) ‘এনিম্যাল’ সিনেমা এককথায় মাথা নষ্ট করা কর্মাশিয়াল সিনেমা। পা থেকে মাথা অবদি একশন ও ড্রামাটিক সিনেমা।
নির্মাতা সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গার ৩ ঘন্টা ২ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের এনিম্যাল মুভি পুরোটা জুড়েই রয়েছে ইমোশনাল সেন্টিমেন্ট, বাবা ছেলের সাইকোলজিক্যাল ক্যামিস্ট্রি সাথে মাস্টারক্লাস একশনের সাইকো টাইপ ভায়োলেন্স! বিশেষ করে রনবীর কাপুরের কয়েকটি লুক দেখারমত ছিলো। লুক গুলোকে প্রতিষ্ঠিত করতে রনবীরকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে নিশ্চয়। সিনেমার সর্ম্পূন গল্পঝুরে রনবীর রাজত্ব করেছেন, সঙ্গে অভিনয় বরাবরের ন্যায় দর্শক প্রিয় হলেও এই সিনেমায় তাকে বার বার ভেঙ্গেছে নির্মাতা। পূর্বের রকস্টার, বারফি,সাঞ্জুর পর আবারো এক দুর্দান্ত রনবীরকে দেখলো এনিম্যাল সিনেমায়। রনবীরের পাশাপাশি ববি দেওয়াল সিমিত সময়ের জন্য স্ক্রিনে ছিলেন। ববি দেওয়ালের উপস্থিতি সিনেমার ভ্যালু দ্বিগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। এনিম্যাল সিনেমার সমস্ত সময়টা অন্যরকম একটা দম নিয়ে রাজত্ব করেছিলেন ববিজ্বি। যদিও তাকে গল্পের প্রয়োজনে মুসলিম না করেও পারতো। কিন্তু সমালোচনা জন্ম দেওয়ার জন্য, ইসলামকে ছোট করে মার্কেটিং রমরমা করার জন্যই মুসলিম করা হয়েছে বলে আমার মনে হয়। ববিজ্বি অনেকদিন পর অভিনয়ে এসে ঝাক্কাস ভিলেন রুপে দেখলো গোটা এশিয়া সিনেমাপ্রেমিরা। দর্শকদের বোকা বানিয়ে! লেখকের চৌকসতার মাধ্যমে দর্শকের চিন্তার বাহিরে দৃশ্যগুলো উপাস্থাপন করেছেন প্রিয় নির্মাতা। তবে এটাও সত্য যে এ সিনেমায় বেশ নগ্নতা আর অশ্লিতা ছিলো। যা বাংলাদেশের প্রদর্শিত হওয়ারমত নয়। অনেক নগ্নতা ভায়োলেন্স লেপ্টে থাকা এনিম্যাল সিনেমা। একটি পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে দেখারমত সিনেমা নয়। এসব সিনেমা দেশের সংস্কৃতিকে লেঙ্টা করে ধর্ষন করবে, বাংলার ঐতিহ্যবাহি সংস্কৃতির ভাটা পড়ার চমৎকার একটি মাধ্যম এনিম্যাল সিনেমা। যারা বাংলার শিক্ষা সংস্কৃতিকে লালন করেন তারা থুতু দিবে অঙ্ক ছাড়াই। সিনেমাটি যদিও ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নির্মিত তারপরও বাংলাদেশের জনগনের জন্য এই সিনেমা প্রদর্শিত হওয়ার যোগ্যত্বা নেই কারন পৃথিবীর মধ্যে আমরাই প্রকৃত বাঙ্গালি, বাংলা সংস্কৃতি আমরাই লালন করছি, ধারন করছি। সিনেমা সম্পর্কে বলতে হলে এনিম্যাল সিনেমা” সম্পূর্ন কমার্শিয়াল সিনেমা। বিশেষ করে বাংলাদেশের কমার্শিয়াল সিনেমা নির্মাতাদের, এনিম্যাল সিনেমাটা হলে গিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছি। আবারও লিখতে বাধ্য হচ্ছি যে, লেখক ও নির্মাতা দর্শকের চিন্তার বাহিরে প্রতিটি দৃশ্য চমৎকার উপাস্থাপন করেছেন। তবে খারাপ বিষয় হলো! ইন্ডিয়া বরাবরের ন্যায় ইসলামকে ছোট করে সিনেমা নির্মান করেই আসছে। ইসলামকে ছোট না করেও দুর্দান্ত সিনেমাটা হতে পারতো। এসব কথা নাই বলি, তবে রশ্মিকা মন্দানার এনিমেল সিনেমায় সমস্ত দৃশ্যের মধ্যে একটা দৃশ্যে যে অভিনয় দেখিয়েছেন! তা দেখে আমি রীতিমতো মুগ্ধ। এক দৃশ্যের সংলাপে নবরসের চমৎকার উপাস্থাপন ও ডেলিভারি। আমার বিচারে ২০২৩ এ এ্যানিমেল সিনেমায় সেরা অভিনয় ছিলো রশ্মিকা মন্দানার। যদিও রশ্মিকা মন্দানা কর্ণাটকের কোড়গু জেলার একটি শহর বিরাজপেটে ১৯৯৬ সালের ৫ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রশ্মিকা মনোবিজ্ঞান, সাংবাদিকতা এবং ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পড়াশুনার পাশাপাশি সে মডেলিং সহ ব্যাবসা সফল সিনেমায় একেরপর এক কাজ করেই যাচ্ছে। সিনেমা সম্পর্কে আর একটু না বল্লে নয়!ক্লাইমেক্স দৃশ্যের ফাইট টা ছিল ইন্ডিয়ার ওয়ান অফ দ্যা বেস্ট ক্লাইমেক্স দৃশ্য, বিশেষ করে সিনেমার শেষ ১ ঘন্টা। একশনের সাথে সাথে ইমোশনালি এটাচ করা জাস্ট মাইন্ডব্লোয়িং তবে এটাও মানতে হবে যে,
কর্মাশিয়াল সিনেমা কোন দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গলময় নয় বরং কর্মাশিয়াল সিনেমা শুধু মুনাফা লাভের জন্য বিনোদন দিতেই নির্মান করা হয়। তাই দেশ ও দেশের সংস্কৃতির স্বার্থে আমাদের বুঝেশুনে সিনেমা আমদানি প্রদর্শিত করা উচিৎ। কেননা একটি দেশকে ধংস করতে হলে, সে দেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতি ধংস করে দিলে- দেশ এমনিতেই ধংস হয়ে যায়। তাই কিছু মুনাফা লাভের চেয়ে, ব্যাক্তি স্বার্থের চেয়ে, দেশ ও দেশের সংস্কৃতি অনেক বড়। আমাদের উচিৎ দেশের সংস্কৃতিকে হেফাজত করা, রক্ষা করা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com