গত ০৮ অক্টোবর ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানাধীন ভাকুর্তা এলাকায় অটোরিক্সা চালক রমজান আলী (৪৮)‘কে হত্যার পর তার লাশ নির্জন স্থানে ফেলে রেখে অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের পরিবার সাভার মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। উক্ত ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব তদন্ত শুরু করে এবং গত রবিবার ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানাধীন ভাকুর্তা এলাকার বহুল আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস অটোরিক্সা চালক রমজান আলী (৪৮) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন সহ রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডর মুলহোতা রাজু(৩০) সহ মোঃ মহসিন (৪০), মোঃ নুর আলম (২৮), মোঃ ইসমাইল (২০),
মোঃ আক্তার (১৯) নামীয় ০৫ জন হত্যাকারী’কে গ্রেফতার করে র্যাব-৪। আজ দুপুরে সিপিসি-২, সাভার ক্যাম্পে কোম্পানি কমান্ডার এক প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সাংবাদিক দের এবিষয়ে জানান।
আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামীরা সকলেই ভোলা জেলার স্থায়ী বাসিন্দা। তারা জীবিকার তাগিদে ঢাকা মহানগরে এসে অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলো। সম্প্রতি তারা সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইসহ ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধভাবে কৌশলে যাত্রী সেজে অটোরিক্সায় উঠে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে আসা সাধারণ নিম্নবিত্ত মানুষের আয়ের একমাত্র উৎস অটেরিক্সা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিতো এবং ক্ষেত্রবিশেষে চালককে মারধর এমনকি হত্যা করে নির্জন স্থানে ফেলে রেখে অটোরিক্সা ছিনতাই করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা গত ০৮ অক্টোবর ঢাকা জেলার সাভারের ভার্কুতা কাইশার চর এলাকার অটো রিক্সা চালক ভিকটিম রমজান আলী (৪৮)’কে হত্যার সত্যতা স্বীকার করে। চক্রের মূলহোতা রাজু ও তার সহযোগী ইসমাইল সাভারের হেমায়তপুর থেকে যাত্রীবেশে ভিকটিমের অটো রিক্সায় উঠে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে তাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সাভারের ভার্কুতা কাইশার চর এলাকার নির্জন স্থানে একটি কলা বাগানে নিয়ে পূর্ব হতে ওৎ পেতে থাকা অপর সদস্যদের সহযোগিতায় অটোরিক্সাটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। এতে চালক ভিকটিম রমজান আলী আত্মরক্ষার্থে ডাক চিৎকার শুরু করলে গ্রেফতারকৃত আসামীরা ভিকটিমের গলায় গামছা পেঁচিয়ে হাত-পা বেঁধে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং লাশটি ফেলে রেখে ভিকটিমের সাথে থাকা অটো রিক্সা, টাকা পয়সাসহ ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে তারা কিছু দিনের জন্য বরিশাল ও ভোলায় আত্মগোপন করে। বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর তারা ঢাকায় ফিরে স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু করে এবং স্থান পরিবর্তন করে ছিনতাই ও ডাকাতির কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলো।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম ব্যবস্থাগ্রহন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে র্যাব কর্তৃপক্ষ।
Leave a Reply