1. : admin :
সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবিতে সেন্টমার্টিনে জেলেদের মানববন্ধন  - দৈনিক আমার সময়

সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবিতে সেন্টমার্টিনে জেলেদের মানববন্ধন 

আখতার হোসেন হিরু,টেকনাফ
    প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩
কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনদ্বীপে জেলেদের ৬৫দিন সাগরে মাছ শিকার বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা ও প্রত্যাহারের দাবিতে এক বিশাল মানববন্ধন হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ মে) বিকেলে প্রবাল দ্বীপের জেটিঘাট সংলগ্ন বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয়রা জানায়,ইলিশের ভরা মৌসুমে সাগরে ৬৫ দিন সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ করায় উপকূলীয় এলাকার সেন্টমার্টিনদ্বীপে জেলেরা না খেয়ে দিন পার করছেন। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেন্টমার্টিনদ্বীপের বাসিন্দারা। অনেকেই এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে না দিতে পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
ইলিশের ভরা মৌসুমে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই মোট ৬৫ দিন বঙ্গোপসাগরে সব ধরনের মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে নিষেধাজ্ঞার জারি করা হয়। এ নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বিপাকে পড়েছেন জেলেসহ বিপণন পেশায় নিয়োজিত উপকূলের  সেন্টমার্টিনদ্বীপের জেলেরা। মাছের ওপর নির্ভর করেই চলে তাদের জীবন-জীবিকা। সেন্টমার্টিন দ্বীপের ১০ হাজার মানুষের আয়ের উৎস ২টি, টুরিজম ব্যবস্যা আর সাগরে মাছ ধরা।  বর্তমানে টুরিজম ব্যবস্যা একদম বন্ধ অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখায় অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেন্টমার্টিনদ্বীপের মানুষ।   এমতবস্থায় সাগের ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ করে দেওয়ায়  না খেয়ে মরবে সেন্টমার্টিনের মানুষ।   এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়ে এক মানববন্ধন করেছেন সেন্টমার্টিনদ্বীপের জেলেরা।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া জেলেরা জানান, সাগরে ইলিশ ধরা বন্ধ করায় তারা বেকার হয়ে পড়েছেন।  এমন কি অনেক জেলেরা  না  খেয়েও আছে।  অধিকাংশ জেলে পরিবারই ধারদেনা করে চলছে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সাধারণ জেলেদের আয়ের পথ না থাকায় তারা বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে পড়বেন বলে আশঙ্কা করেছন সংশ্লিষ্টরা।
এ নিষেধাজ্ঞায় ট্রলার মালিকরাও জেলেদের দাদন দিয়ে পড়েছেন অনিশ্চয়তায়।
ট্রলার মালিক আবু তালেব জানান, ট্রলার ও জাল মেরামত এবং জেলেদের আগাম টাকা দিয়ে তারা এখন সাগরে মাছ ধরতে পারছেন না। নিষেধাজ্ঞার কারণে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা।
সেন্টমার্টিনদ্বীপ পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা কামাল নামে এক জেলে  জানান,ঘূর্ণিঝড় মোখার তান্ডবে আমাদের পুরো দ্বীপ লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এমতাবস্থায় বসতঘর মেরামত করতে গিয়ে হিশশিম খেতে হচ্ছে। একমাত্র আয়ের উৎস সাগরে মাছ ধরা ৬৫দিন বন্ধ করে দেওয়ায় এখন অসহায় হয়ে পড়েছি, পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। এনজিওর ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে এলাকা ছেড়ে পালাতে হবে।
সেন্টমার্টিন  ফিশিং বোট মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আজিম জানান, তারা সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে উপকূলে ফিরেছেন। সাগরে যেতে না পারায় চরম ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাদের। দীর্ঘদিন মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলেরা অসহায় হয়ে দিনাতিপাত করছেন। ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত দ্বীপের জেলেদের দাবী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের পেটে ভাত দিন না হয় সাগরে মাছ ধরা উম্মুক্ত করে দিন।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, জেলেদের একটি স্মারকলিপি হাতে পেয়েছি। তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, জেলেদের একটি স্মারকলিপি হাতে পেয়েছি।  সেটি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করা হবে।
সাগের ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধের নিষেধাজ্ঞা পরিবর্তন, স্থগিতকরন সরকারি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত।  নতুন কোনো নির্দেশনা না আসায় এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। এছাড়া এ সময়ের জন্য তালিকাভুক্ত জেলেদেরকে বিশেষ কর্মসূচিরর আওতায় আনা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com