যাত্রীবেশে মাইক্রোবাস ডাকাতিকালে মাইক্রোবাস ড্রাইভার হত্যা মামলার যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মোঃ জোবায়ের হোসেন(৪০)’কে রাজধানীর বনানী থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২।
জানা যায়, বিগত ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর মৌলভী বাজার জেলার শ্রীমঙ্গল মাইক্রোবাস ষ্টান্ড থেকে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে মাইক্রেবাস ভাড়া করে আটককৃত আসামী। এরপর থেকে চালক ও মাইক্রোবাসের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ঘটনার ১০ দিন পর ৬ অক্টোবর হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার রঘুনন্দন রাবার বাগানে মাইক্রোবাস চালক মহসীনের লাশ পাওয়া যায়। উক্ত ঘটনায় চুনারুঘাট থানা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত ঘটনায় চুনারুঘাট থানা-পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে অভিযুক্ত ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ বিচারিক কার্যক্রম শেষে উক্ত মামলায় মাইক্রোবাস ড্রাইভার মহসীন হত্যার ঘটনায় ১১ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। একই আদেশে আদালত আসামীদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদন্ডের আদেশ দেন। এই ঘটনায় দেশব্যাপী বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় র্যাব-২ এ বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামিদের গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে গোয়েন্দা নজরধারী বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ০৩ মে ২০২৩ইং তারিখ ১৫.৩০ ঘটিকায় রাজধানীর বনানী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত ডাকাতিকালে মাইক্রোবাস চালক হত্যাকান্ডের যাবজ্জীবন কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ জোবায়ের হোসেন(৪০) কে দীর্ঘ ১২ বছর পর আটক করেন। আটককৃত মোঃ জোবায়ের হোসেন কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার আঃ লতিফের ছেলে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত জানায়, উক্ত ঘটনার পর থেকে সে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিজের নাম পরিবর্তন করে প্রথমে মাওয়া এবং পরবর্তীতে চট্রগ্রাম ও সর্বশেষে ঢাকার আশুলিয়াতে ড্রেজিং কাজ করে আত্মগোপনে ছিল। গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ জোবায়ের হোসেন উক্ত ডাকাতিকালে মাইক্রোবাস চালক হত্যাকান্ডের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানা যায়। ধৃত যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোঃ জোবায়ের হোসেন উক্ত মামলায় ১১ মাস জেল খাটার পর জামিনে বের হয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়িয়ে বিভিন্ন ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপনে ছিলো। আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে যা যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতে র্যাব-২ এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই শ্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের প্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণ প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িত দীর্ঘদিনের পলাতক দন্ডপ্রাপ্ত অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
Leave a Reply