ঈদের দিন ভোরে ময়মনসিংহ নগরীর গোয়াইলকান্দি ও ডিএন চক্রবর্তী রোডে এক অটোচালক ও এক রিক্সাচালক খুনের রহস্য উদ্ঘাটন এবং ঘটনার সাথে জড়িত ৩ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ময়মনসিংহ নগরীর গোয়ালকান্দি এলাকার ভজন কুমার দে এর পুত্র অনন্ত কুমার দে (১৯), জামতলা এলাকার কাজী মিল্লাত হোসেনের পুত্র মাহিন বাদশা(১৯) এবং মোহাম্মদ খোকনের পুত্র মামুন (১৯)। শনিবার (২২ এপ্রিল) বিকেলে ৩টায় নগরীর গোহাইকান্দি জামতলা ও কাশর তিন কোনা পুকুরপাড় থেকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
রোববার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা এ তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন,২২ এপ্রিল ঈদের দিন ভোর পৌনে ৫ টায় কোতোয়ালী মডেল থানাধীন ৯/গ ডি এন চক্রবর্তী রোডস্থ পাকা রাস্তায় রিক্সার উপর অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তির রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায় এবং একই তারিখে সাড়ে ৫ টায় কোতোয়ালী মডেল থানাধীন গোহাইলকান্দি পশ্চিমপাড়া সরকারি পাকা ড্রেনের রাস্তার উপর রিক্সার পাশে আরেক জনের রক্তাক্ত মৃত দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ উপস্থিত হয়ে ক্রাইমসিন পর্যবেক্ষন, আলামত জব্দসহ প্রাসঙ্গিক সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারগণ ঘটনাস্থলদ্বয় পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটনে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ভিকটিমদ্বয়ের পরিচয় সনাক্ত করা হয়। প্রথম ঘটনাস্থলের নিহত ব্যাক্তি হাবিবুর রহমান (৫২)। সে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ভাটি বাড়েরার পাড় এলাকার মোঃ আক্কাস আলী পুত্র এবং দ্বিতীয় ঘটনাস্থলের নিহত ব্যক্তির নাম সাদেক মিয়া (৩৫)। সে সদর উপজেলার দাপুনিয়া শষ্যমালা এলাকার মোঃ চাঁন মিয়া পুত্র। নিহত উভয়েই পেশায় অটোরিকশা চালক ছিল।
ঘটনাস্থলে ক্রাইমসিন পরিদর্শন, তথ্য প্রযুক্তি ও ঘটনার মটিভ পর্যবেক্ষন করে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, ঘটনাটি একই গ্রুপ কর্তৃক সংগঠিত।
ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গতকাল বিকেলে অত্র কোতোয়ালী থানাধীন গোহাইকান্দি জামতলা ও কাশর তিন কোনা পুকুরপাড় থেকে একই তারিখ বেলা ৩টায় গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ সময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু এবং আসামিদের পরিধেয় কাপড়ে লেগে থাকা রক্ত মাখা জামা কাপড় উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানান, উক্ত আসামিগণ উভয় ঘটনার কথা স্বীকার করেন। ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে আসামীগণ পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে রিক্সা ভাড়া করে কৌশলে তাদের কাঙ্খিত স্থানে নিয়ে একই ছুরি দিয়ে অটোচালক ও রিক্সাচালক দুইজনকে হত্যা করে তাদের সাথে থাকা টাকা পয়সা নিয়ে যায় বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
উল্লেখ যে, আসামীদের মধ্যে অনন্ত কুমার দে এর নামে কোতোয়ালী মডেল থানার মামলা নং- ২০ তাং- ০৬-১২-২০২০, ধারা- ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ এ ধারা রুজু আছে। অন্য দুই আসামীর বিরুদ্ধেও স্থানীয়ভাবে বিরুপ তথ্য পাওয়া যায় এবং তারা নেশাগ্রস্ত। ধৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়েছে ।
প্রেস ব্রিফিংয়ে এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাঃ রায়হানুল ইসলাম, শামীম হোসেন, ফাল্গুনী নন্দী, কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ, পুলিশ পরিদর্শক যানবাহন ( প্রশাসন) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ডিআই ওয়ান আল মামুন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুক হোসেন সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন
Leave a Reply