বরিশালের উজিরপুরে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে করা মামলার প্রধান দুই আসামী বাবা-ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৮। ১৪ মে মঙ্গলবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কাজী যুবায়ের আলম শোভন। গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলো তাওহীদ হাওলাদার (৩০) ও বাবা সুলতান হাওলাদার (৫০)। তারা উজিরপুর পৌরসভার মাদারশী এলাকার হাসপাতাল রোডের বাসিন্দা। গত ৩ মে সুলতান হাওলাদারের একতলা ভবনের সিড়ি কোঠার আড়ার সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় ৯ বছর বয়সী শিশু তামান্না আক্তারের লাশ উদ্ধার করে উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করে স্কুলছাত্রীর লাশ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে গত ৭ মে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে শিশুর মা তানজিলা বেগম বাদী হয়ে মামলা করে। মামলায় ধর্ষক তাওহীদসহ তার বাবা সুলতান হাওলাদার, মা নাজনিন বেগম, বোন সুমি আক্তার ও সিমু আক্তারকে আসামী করা হয়। বিচারক মোঃ ইয়ারব হোসেন আনা অভিযোগ তদন্ত করে উজিরপুর মডেল থানার ওসিকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দেন। র্যাব-৮ এর অধিনায়ক জানান বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আমির হোসেন ফকিরের কন্যা তামান্নাকে গত ২ মে উজিরপুরের মাদারশী এলাকার বাসায় বেড়াতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন ৩ মে শিশুকে একা পেয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে তাওহীদ হাওলাদার। এলাকার লোকজন যেনো জানতে না পারে এ জন্য শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর সিড়ি কোঠায় আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখে। আসামীরা সুকৌশলে পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য শিশু আত্মহত্যা করেছে প্রচার করে পরিবারকে জানায়। তামান্নাকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী জড়িতদের বিচার দাবীতে শিশুর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সভা করেছে। আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর ঘটনায় র্যাব-৮ ছায়া তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ফরিদপুরের চুনাঘাট বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামীদ্বয়ের অবস্থান সনাক্ত করে র্যাব-১০ এর সিপিসি-৩ ক্যাম্পের সহায়তায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের উজিরপুর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
Leave a Reply