1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. admin@dailyamarsomoy.com : admin :
ফেনীতে অর্ধকোটি টাকার স্লুইস গেইট অকেজো - দৈনিক আমার সময়

ফেনীতে অর্ধকোটি টাকার স্লুইস গেইট অকেজো

অনলাইন ডেস্ক
    প্রকাশিত : সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩
আবুল হাসনাত রিন্টু, ফেনী:
ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বদরপুরে বিএডিসির বাস্তবায়িত ৬০ লাখ টাকার স্লইস গেটটি কোনো কাজে আসছে না। দীর্ঘ তিন বছরেও এর চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংস্কার না হওয়ায় বোরো মৌসুমে পানির অভাবে বদরপুরসহ আশপাশের এলাকায় বোরো আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। নির্মাণের কিছুদিন পর থেকেই এটি বিকল অবস্থায় পড়ে আছে। বরং কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে সরকারি অর্থে নির্মিত এ স্থাপনাটি।
কিন্তু এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান হচ্ছে না। এতে স্থানীয় কৃষক ও সচেতন মহলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
দেখা যায়, স্লুইস গেটের উভয় পাশে মাটি সরে যাওয়ায় গাইডওয়াল দেবে গেছে। বিভিন্ন সময়ে দেবে যাওয়া স্থানে মাটিভর্তি বস্তা দেয়া হলেও তা খালের পানিতে ভেসে গেছে। ফলে আশপাশের শত শত একর জমি অনাবাদি পড়ে আছে। বদরপুর ও আশপাশের কৃষক বীজতলা তৈরি করলেও পানির অভাবে জমিতে চারা রোপণ করতে পারছেন না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভারত থেকে নেমে আসা তেতৈয়া খালটি বদরপুর ও আশপাশের এলাকায় শত শত একর জমিতে চাষাবাদের একমাত্র পানির উৎস। বর্ষা মৌসুমে ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ ঠেকানো ও বোরো মৌসুমে পানি ধরে রেখে চাষাবাদ অব্যাহত রাখতে তেতৈয়া খালের বদরপুর এলাকায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে স্লুইস গেট নির্মাণ করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। ক্ষুদ্র সেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে তেতৈয়া খালের ওপর অপরিকল্পিতভাবে বড় আকারের হাইড্রোলিক স্ট্রাকচার (স্লুইস গেট) নির্মাণকাজটি বাস্তবায়ন করে মেসার্স রিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি নুরুল আমিন। নির্মাণের কিছুদিন পরই স্লুইস গেটটির দুই পাশের গাইডওয়াল ভেঙে যায়। পাশ দিয়ে মাটি দেবে পানি আসা-যাওয়া শুরু হয়। পরে ঠিকাদার নুরুল আমিন সেখানে কিছু মাটিভর্তি বস্তা দিলেও তা বিলিন হয়ে গেছে। ফলে একদিকে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে শত শত একর জমি অনাবাদি পড়ে থাকে, অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে ফসলাদি তলিয়ে যায়।
স্থানীয় কৃষক আবদুল মালেক জানান, তেতৈয়া খালের ওপর গেটটি নির্মাণের আগে আমরা বাঁধ দিয়ে পানি ধরে রাখতাম। তা প্রয়োজনমতো ব্যবহার করে চাষাবাদ করতাম। কিন্তু এখানে গেটটি নির্মাণের পর সেই সুযোগও আমাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। গেটটি এখন বর্ষা ও শুষ্ক—মৌসুমেই আমাদের জন্য বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলতি মৌসুমেও খালটির বাংলাদেশ অংশে শত শত একর জমি অনাবাদি পড়ে আছে। অনেক কৃষক বীজতলা তৈরি করলেও পানির অভাবে জমিতে চারা লাগাতে পারেননি।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও মুন্সিরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, নকশা অনুযায়ী স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়েছে। তবে বিএডিসির নকশায় কিছু ভুল থাকায় এখন নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
ফুলগাজী উপজেলা বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী মো. জানে আলম বলেন, ‘এর আগেও স্লইস গেটটি পরিদর্শন করে কিছু সংস্কার করা হয়েছিল। তবে খালে পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্লুইস গেটের নিচ দিয়ে সুড়ঙ্গ হয়ে পানি নিচের দিকে চলে যায়। মূলত এখানে উইংওয়াল নির্মাণ না হলে গেটটি মানুষের উপকারে আসবে না।’
ফুলগাজী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবদুল আলিম মজুমদার বলেন, ‘স্লুইস গেটটি নির্মাণের সময় নকশায় ভুল ছিল। যার কারণে এটি কৃষকের কোনো কাজে আসছে না।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com