আজ (শনিবার) সকালে রাজধানীর রমনার বটমূলে বর্ষবরণ আয়োজনের সর্বশেষ নিরাপত্তার প্রস্তুতি পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠান বাঙালি জাতিসত্তার অসাম্প্রদায়িক চেতনার একটি মুহূর্ত প্রকাশ। সেজন্য এটির উপরে বারবার আঘাত এসেছে সহিংস হামলা হয়েছে, জঙ্গি হামলা হয়েছে। সেজন্য সকল কিছু মাথায় রেখেই ডিএমপির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যদিও এ বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট হামলার সংখ্যা এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে নেই।
কমিশনার বলেন, পহেলা বৈশাখ, শুভ নববর্ষ, এই দিনটি উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করার জন্য মুখিয়ে আছে দেশবাসী। এই অনুষ্ঠান প্রধান অনুষ্ঠানগুলো ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি, জাতীয় সংসদ ভবন, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, রবীন্দ্র সরোবর, হাতিরঝিল সহ সারা ঢাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করা হবে। এসব অনুষ্ঠান সমূহে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
কমিশনার আরও বলেন, নিরাপত্তার অংশ হিসেবে আমরা অনুষ্ঠান স্থলের প্রত্যেকটি জায়গা পর্যবেক্ষণ করব। এ লক্ষ্যে ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। পুলিশের ভিডিও এবং স্টিল ক্যামেরা থাকবে অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশ এলাকা অনুষ্ঠান শুরুর আগে এসবির সুইপিং টিম ও ডিএমপির ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করা হবে এবং এই কাজগুলো এখনি শুরু হয়ে গেছে। বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট স্টান্ড বাই থাকবে তারাও ইতিমধ্যেই মহড়া করেছে এবং কোথায় কিভাবে তারা অবস্থান নেবে সেটিও তারা পর্যবেক্ষণ করেছে।
কমিশনার জানান, শহরের কিছু স্থানে যানবাহন চলাচলে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আজকে সন্ধ্যা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এবং আগামীকাল নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু কিছু জায়গায় ডাইভারশন দেয়া হবে। যারা আগামীকাল গাড়ি চালাবেন তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে তারা যেন পুলিশকে সহায়তা করেন।
তিনি আরও জানান, বাঙালির এই উৎসবকে ঘিরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ, এসবি এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন গুলো তৎপর থাকবে আমাদের এই অনুষ্ঠানস্থলে আগামীকাল বিকেল ৫ টা পর্যন্ত প্রবেশের সুযোগ থাকবে পাঁচটার পরে আর কেউ এখানে প্রবেশ করতে পারবেন না এবং সন্ধ্যার আগে সকল অনুষ্ঠানমালা সম্পন্ন করতে হবে।
হাবিবুর রহমান বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ছাড়াও এখানে টুরিস্টদের ওয়েলকাম জানানোর জন্য এবং সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণে সহায়তার জন্য টুরিস্ট পুলিশের টিম মোতায়েন থাকবে, লেক এলাকায় নৌ পুলিশের টিম মোতায়েন থাকবে। এছাড়া আমাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে মেডিকেল টিম থাকবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকেও একটি সাময়িক মেডিকেল সেন্টার গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই সরকারের পক্ষ থেকে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উৎসব পালনের একটি সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে আমি মনে করি যে সবাই নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবেন।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় রমনার বটমূলে আসেন ডিএমপি কমিশনার মো: হাবিবুর রহমান। এসময় ডিএমপির সকল উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ডিএমপির কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ডিএমপি কমিশনার নিরাপত্তার সকল খুঁটিনাটি বিষয় পর্যবেক্ষন করেন। এছাড়া ডিএমপির সোয়াত, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ডগ স্কোয়াডের সমন্বিত মহড়া পর্যবেক্ষন করেন।
Leave a Reply