1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. admin@dailyamarsomoy.com : admin :
নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ক্রিমিনোলজি বিভাগের মানববন্ধন - দৈনিক আমার সময়

নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ক্রিমিনোলজি বিভাগের মানববন্ধন

ধ্রুব নয়ন: 
    প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের উদ্যোগে ‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক মানববন্ধন ও র‍্যালি (সোমবার) ১৭ মার্চ সকাল ১০:০০টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়।

 

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ সমাজে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা, অপরাধ প্রবণতা এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি নিয়ে তাঁদের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বক্তারা সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, অপরাধ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ন্যায়বিচারের সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।

 

ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারপার্সন শাহারিয়া আফরিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, “ধর্ষণকে অন্য ধরনের অপরাধের সাথে একই মাত্রায় মূল্যায়ন করার কোনো সুযোগ নেই, ধর্ষণকে একটি স্বতন্ত্র গর্হিত অপরাধ হিসেবেই তদন্ত ও বিচারকার্য পরিচালনা করতে হবে।” এছাড়াও তিনি দেশ, রাষ্ট্র ও সমাজের সর্বস্তরে ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি প্রচলন করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

 

বিভাগের প্রভাষক মোঃ রেজাউল করিম সোহাগ বলেন, “সমাজে নিরাপত্তাহীনতা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে অপরাধ দমন ও বিচারিক ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হলে একাডেমিক গবেষণা এবং নীতি-নির্ধারকদের সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন।”

 

মানববন্ধন ও র‍্যালীতে উপস্থিত অন্যান্য বিভাগীয় শিক্ষকগণ জানান, “নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ এসব কোনো শিক্ষিত, সভ্য ও উন্নত রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। সরকার নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ বিশ্বের পশ্চাৎপদ দেশগুলোর ন্যায় বিবেচিত হবে।”

 

র‍্যালীতে ক্রিমিনোলজি বিভাগের নারী শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পুরুষ শিক্ষার্থীদেরও স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ পরিলক্ষিত হয়।

 

তারা বলেন, “নারী শব্দটা শুনলে প্রথমেই আমাদের মা বা বোনের কথা মনে পরে। যেসকল নারী সহিংসতার শিকার হচ্ছেন, তারা নিশ্চয়ই কারো মা, কারো বোন। আমাদের পরিবারের কোনো নারীর সাথে এমন কোনো অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পূর্বেই আমাদের এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে”।

 

তারা আরও বলেন, “বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ অনেক আইন প্রচলিত রয়েছে, কিন্তু সেগুলোর কোনো কার্যকর বাস্তবায়ন পরিলক্ষিত হচ্ছে না। উপরন্তু এসব সহিংসতার পক্ষে পোশাকের শালীনতার কথা বলা হয়। যা এক অর্থে “ভিক্টিম ব্লেমিং” ও “ক্যারেক্টার অ্যাসাসিনেশন”-কে প্রশ্রয় দেয়।

 

যদি মাত্র ৮ বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষিত হতে পারে, তাহলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি প্রকৃতপক্ষে কতটা ভয়াবহ, তা হয়তো অনুমান করাও কঠিন”

 

ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে বিশেষ ট্রাইবুনাল গঠন করে দ্রুত ও কার্যকরী উপায়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

 

মানববন্ধন শেষে র‍্যালিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু হয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে এসে শেষ হয়। এতে বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড বহন করেন, যেখানে লেখা ছিল – “নারীর বিরুদ্ধে নয়, সহিংসতার বিরুদ্ধে দাঁড়াই;

 

We Deserve Safety, Not Scars;

নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন;

Punish The Rapist, Enforce The Law;

Stop Violence Against Women;

Justice For Survivors, Punishment For Rapists.

 

এই কর্মসূচির মাধ্যমে ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সহিংসতা প্রতিরোধে তাদের সচেতনতা ও দায়িত্ববোধের প্রকাশ ঘটান।

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com