1. : admin :
ধরাছোয়ার বাইরে স্বর্ণ চোরাচালানের মুলহোতা দোলন - দৈনিক আমার সময়

ধরাছোয়ার বাইরে স্বর্ণ চোরাচালানের মুলহোতা দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক
    প্রকাশিত : রবিবার, ৯ এপ্রিল, ২০২৩

 

ধরাছোয়ার বাইরে স্বর্ণ চোরাচালানের মুল হোতা এনামুল হক খান দোলন। তার বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাকারবারের তথ্য দিয়েছে দুবাই ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। নজরদারিতে রেখেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। তলব করা হয় ব্যাংক হিসাব। গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা। স্বর্ণ চোরাচালানের মূল হোতা এনামুল হক খান দোলন ধরা ছোয়ার বাইরে থাকায় কোন ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না স্বর্ণ পাচার। শুল্ক গোয়েন্দাদের কড়া নজরদারির মধ্যেও শুল্ক ফাকি দিয়ে আসছে স্বর্ণ। বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে স্বর্ণ পাচার হচ্ছে পাশ্ববর্তী দেশগুলোতে। আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনীর হিসাবে চলতি বছরের তিনমাসে প্রায় ৪০ কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে। চোরাচালানে জড়িত স্বর্ণ ব্যবসায়ী এনামুল হক খান দোলনকে দীর্ঘ দিন ধরে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হলেও কোন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছেনা। যার ফলে তিনি স্বর্ণের চোরাচালানের অব্যাহত রেখেছেন। তার মালিকানাধীন ডায়মন্ড অ্যান্ড ডিভার্স ও শারমিন জুয়েলার্সের আড়ালে তিনি স্বর্ণ পাচার সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। শুল্ক গোয়েন্দারা মাঝে মধ্যে চোরাচালানের স্বর্ণ জব্দ করছেন। বাহকদের তুলে দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। মামলা হচ্ছে, তদন্ত হচ্ছে। কিন্তু চোরাচালানের মূলহোতা এনামুল হক খান অধরাই থেকে যাচ্ছে। তবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নজরদারিতে রয়েছেন স্বর্ণ চোরকারবারিদের গড ফাদার দোলন। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সুত্র জানিয়েছে, এনামুল হক খান দোলন দুবাই এবং সিঙ্গাপুর সিন্ডিকেটের সহায়তায় দুবাই এবং সিঙ্গাপুর হতে বাংলাদেশে আগমানকারী বিভিন্ন যাত্রীর মাধ্যমে স্বর্ণ ও স্বর্ণালংকার দেশে পাঠান। এবং বিধি বর্হি:ভূত ভাবে মূল্য পরিশোধসহ বিদেশে অর্থ পাচার করেন। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে এনামুল হক খান দোলনের মানি লন্ডারিংয়ের সুনিদিষ্ট তথ্য দিয়েছে দুবাইয়ের ফিন্যান্সিয়াল ইল্টেলিজেন্স ইউনিট। তার বিরুদ্ধে দুবাই ভিত্তিক স্বর্ণ চোরাচালান সিন্ডিকেটে জড়িত থাকার তথ্য দিয়েছে দুবাইয়ের অর্থ পাচার প্রতিরোধ ইউনিট। চোরাচালানের রহস্য উন্মোচনের জন্য দোলনকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মজুদ সব স্বর্ণের হিসাব নিয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। গত বছরের ডিসেম্বরে এনামুল হক খান দোলন, তার স্ত্রী, পুত্র ও কন্যার ব্যাংক হিসাব তলব করেছিল বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও আইন শৃংখলা রক্ষাবাহিনী সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত যশোর, সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৪৬ কেজি ৪৮৬ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মুল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ১০ বছরে (২০১৩ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত) অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সারা দেশে অভিযান চালিয়ে ২ হাজার ৫৮৩ কেজি সোনা জব্দ করেন। জব্দ হওয়া সোনার বাজারমূল্য প্রায় ১ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা। এসব ঘটনায় হওয়া মামলায় ২৮৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেটের জুয়েলারি দোকানকে কেন্দ্র করে দোলন অবৈধ স্বর্ণালংকার ব্যবসার শাক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। চোরাকারবারের মাধ্যমে তিনি অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ঢাকায় একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাট ছাড়াও তার ব্যাংকে বিপুল অঙ্কের অর্থ রয়েছে। দোলনের গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের এনামুল হক দোলনের বিশাল বাংলো। পাঁচ তারকা মানের অভিজাত বাংলোটি খান বাড়ী হিসেবে পরিচিত। এই বাড়ি নির্মাণের জন্য যাবতীয় ফিটিংসহ গৃহসজ্জার উপকরণ আনা হয় দুবাই ও ইতালি থেকে। প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন তিনি অবৈধ কারবার চালিয়ে গেলেও এতদিন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, দেশে-বিদেশে অন্তত অর্ধশতাধিক গডফাদার চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। এসব গডফাদারদের শনাক্ত ও পরিচয় বের করা হয়েছে। কিন্তু উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ ও অনেক গডফাদার দেশের বাহিরে থাকার কারণে তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। অবৈধভাবে স্বর্ণের টাকা দিয়ে অস্ত্র ও মাদক কেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সুত্র। এসব বিষয়ে এনামুল হক খান দোলনের বক্তব্য নেওয়ার জন্য বেশ কয়েক বার তার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি ধরেননি। নাম পরিচয় দিয়ে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোন সাড়া দেননি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com