রাজধানীর তুরাগ থানার কামারপাড়া এলাকায় একটি পাঁচতলা ভবনের ছাদের কক্ষ থেকে মৌসুমী ইয়াসিন সুমি (৪৫) ও ইব্রাহিম হোসেন অপূর্ব (৩৩) নামের দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ইব্রাহিম ও মৌসুমী নিজেদের মধ্যে ধর্মের ভাই-বোনের সম্পর্ক তৈরি করেছিলেন বলে জানা যায় । নিহত মৌসুমীর গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর, আর ইব্রাহিমের বাড়ি ফরিদপুর জেলায়।
পুলিশের ধারণা, মৌসুমী নামে ওই নারীকে গলাকেটে হত্যার পর আত্মহত্যা করেন ইব্রাহিম।
গত সোমবার (১১ মার্চ) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে তুরাগের কামারপাড়া (শাপলার মোড়) এলাকার ইউসিবি ব্যাংক এর সামনের গলি শাহাব উদ্দিনের ৮ নং বাড়ির পাঁচতলা ভবনের ছাদের কক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৌসুমী তার স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কের ২৮ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকতেন।
মৃত মৌসুমী বেগমের স্বামী জানান, তার স্ত্রী এবং মৃত ইব্রাহিম হোসেন উভয়ই একে অপরকে ধর্মের ভাই বোন হিসেবে মেনে দীর্ঘদিন ধরে একসাথে চলাফেরা করে আসছিল। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পাতানো ভাই ইব্রাহিম হোসেন এর সাথে দেখা করতে আসেন মৌসুমী বেগম। সন্ধ্যা পর্যন্ত তার আর খোঁজ না পাওয়ায় তাদের দুই ছেলে ইব্রাহিম এর বাসায় এসে দরজা বন্ধ পান এবং দরজা ধাক্কানো শুরু করেন। এক পর্যায়ে পুলিশ ডেকে এনে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করলে উভয়ের মরদেহ দেখতে পান তারা।
তবে মৃত ইব্রাহিমের ভাই বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলছেন, মৌসুমী বেগমের সাথে তার ছোট ভাই আরিফের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল যা থেকে সরে আসতে উভয়কে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলেন তারা। তবে আজ কীভাবে কি হলো তা এখনো বুঝতে পারছেন না।
তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোস্তফা আনোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কামারপাড়া এলাকার একটি পাঁচতলা ভবনের ছাদের কক্ষ থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নারীর মরদেহ গলাকাটা অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিল। পাশে ছিল একটি রক্তাক্ত চাকু। আর গলার মধ্যে প্লাস্টিকের তার প্যাঁচানো অবস্থায় মেঝেতে পরে ছিল যুবকের মরদেহ।
ওসি আনোয়ার মরদেহের অবস্থা দেখে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে প্রথমে পুরুষ নারীটিকে গলা কেটে তাকে হত্যা করেছে। এরপর সে নিজে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
ঘটনার পরই সেখানে তুরাগ থানা-পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এর ক্রাইম সিন ইউনিট তাদের কাজ শুরু করে। এরপর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply