আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদীর ১০০ ফুট বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষ। শুক্রবার সকালে হঠাৎ এই ভাঙ্গন দেখা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে প্রায় ১০০ ফুট বেড়িবাঁধের সামনের জায়গা নদীর চলে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশ থেকে প্রায় দুটি গ্রুপে ৪৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে বেড়িবাঁধের সংস্কারের কাজ চলছে। এমত অবস্থায় শুক্রবার সকালে হঠাৎ করে প্রায় ১০০ ফুট বেড়িবাঁধের সামনের অংশ নদীতে চলে যায়। সাথে সাথে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিছট গ্রামের নদীপাড়ের বাসিন্দা মাহমুদ হোসেন ও খলিল গাজী জানায়, দীর্ঘদিন একটু একটু করে ভাঙতে ভাঙতে বিছট গ্রাম খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে চলে গেছে। এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ বসতভিটা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তাদের আর জায়গা নাই। এরই মধ্যে খোলপেটুয়া নদীর প্রবাল ¯্রােতের কারণে শুক্রবার সকালে নদীপাড়ের কিছু অংশ নদীর মধ্যে ভেঙে যায়। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এ জনপদের মানুষ। তাদের দাবি ত্রাণ নয় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ।
বিছট গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক গাজী, খোকন সরদার ও মালেক সরদার জানায়, ভাঙ্গন আতঙ্কে আমাদের রাত জেগে পাহারা দিতে হচ্ছে। আমরা সবসময় আতঙ্কে থাকি কখন বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। আর এই স্থান থেকে ভেঙ্গে গেলে আনুলিয়া খাজরা ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম প্লাবিত হবে। পাশাপাশি ভাঙ্গন কূলে একটি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে। কোমলমতি শিশুদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কিত থাকে অভিভাবকরা। তারা দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ দাবি জানান।
আনুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শওকত হোসেন বলেন, কয়েক বছর ধরে বিছট প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদী রক্ষা বেড়িবাঁধে ভাঙন লেগে আছে। একাধিকবার এ স্থানটি সংস্কার করা হলো প্রবল ¯্রােতের কারণে ভেঙ্গে যায়। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি ফোল্ডারের মাধ্যমে ৪৩০ মিটার রাস্তা পেলেসিং এর কাজ চলমান রয়েছে। কাজও প্রায় শেষের পথে। কিন্তু শুক্রবার সকালে নির্মানধীন কাজের মধ্যে ১০০ ফুট বেড়িবাঁধের সামনের অংশে ফাটল ও ভাঙ্গনে নদীর গর্ভে যায়। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিছট খোলপেটুয়া নদী সংলগ্ন ভাঙ্গনের সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। এলাকাবাসী একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি করে আসছে। হঠাৎ করে দুপুরের জোয়ারে ১০০ থেকে ১৫০ ফুট ভেঙে যায়। বিষয়টি তাৎক্ষণিক পান উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত সংস্কার করা না হলে দুই এক জোয়ারের মধ্যে ভেঙ্গে আনুলিয়া খাজরা সহ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এসো সুমন হোসেন বলেন, ভাঙ্গনের খবর পাওয়ার পরে শনিবার সকালে ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেছি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। দ্রুত এই ভাঙ্গনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে মরিচাপ নদীর গোয়ালডাঙ্গা বাজার সংলগ্ন বেড়িবাঁধ ও চাপড়া হাই স্কুল সংলগ্ন বেড়িবাঁধে ব্যাপক আকারে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি বাড়ি নদীর গর্ভে চলে গেছে। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।
Leave a Reply