হ্যান্ডহেল্ডে মেসেঞ্জার, ভাইভার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, গুগল ডুয়োসহ বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে যোগাযোগের যুগ এখন। ‘চিঠি দিও প্রতিদিন’- গানের আবেদন ফুরিয়েছে। ডাকবিভাগ বা পোস্ট অফিসের দিকে কারো পা পড়ে না বললেই চলে। অথচ এক যুগ আগেও কত কদর ছিল।আধুনিকতার ছোঁয়া লেগে সবাই ভুলে গিয়েছে অনেক পুরোনো ঐতিহ্যগুলোকে।
সেই পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এনএসইউ টিভি ও রেডিও আয়োজন করে বাংলা ভাষাই ‘খোলা চিঠি’ লেখা প্রতিযোগিতা।
গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সভা কক্ষে এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও সনদপত্র প্রদান করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও কথা সাহিত্যিক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল।
প্রতিযোগিতায় ১ম হয়েছেন ফাহাদ ইবনে শামস, ২য় সুমাইয়া হোসেন, ৩য় সাদিয়া ইসলাম রিমি ,৪র্থ মাহফুজা আলম মিতা,ও ৫ম হয়েছেন শাহরিয়ার কবির স্বচ্ছ।
জানা যায়, প্রতিযোগিতায় প্রায় ২শতাধিক চিঠি এনএসইউ’র ডাকবাক্সে জমা হয়।এবং সেই লেখা চিঠিগুলো এনএসইউ’র শিক্ষকদের সম্মিলিত উদ্যোগে ডাকযোগে তাদের প্রিয়জন বাবা-মায়ের কাছে পাঠানো হয়।
শিক্ষাবিদ ও কথাসাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন,পৃথিবীতে সাত হাজার ভাষা আছে যা এই শতক শেষ হওয়ার আগেই মারা যাবে। অর্থাৎ পনের দিনে একটা করে ভাষা মারা যাচ্ছে। একটি ভাষার সাথে সংস্কৃতিসহ অনেক কিছু জড়িত থাকে। ভাষা যদি মারা যায়, তাহলে আমরা অনেক ইতিহাস, সংস্কৃতি থেকে পিছিয়ে পড়বো।
তিনি আরও বলেন, “আমরা বাংলা ভাষাকে টেকনোলজিতে অভিযোজনের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি। দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে একত্র হয়ে আমরা মাতৃভাষার গবেষণা এবং উন্নয়নে যথার্থ ভূমিকা রাখতে পারি। দেরিতে শুরু করলেও আমরা যেন এর সুফল দ্রুত পাই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধক্ষ ড.আব্দুর রব খান বলেন,বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে লেখার অভ্যাসটা একেবারে নেই বললেই চলে। বাংলিশ ভাষার ব্যবহারে তারা মাতৃভাষার উপর দক্ষতাই হারাচ্ছে না কেবল, হারাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যও।
বাংলাদেশ ডাক বিভাগ হারানো সেই ঐতিহ্য রক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদেরকে লেখার প্রতি আবারো উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি। চেষ্টা করছি চিঠি লেখার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির। আর এই ভাবনা থেকেই আমরা আয়োজন করেছি ভালোবাসার মানুষের কাছে চিঠি লেখার প্রতিযোগিতা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটেকনিক সোশ্যাল সাইন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড.রিজানুল খায়ের, মিডিয়া ও কমিউনিকেশন সাংবাদিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.তৌফিক ইলাহী ও সহকারী অধ্যাপক ড.শরিফুল ইসলাম ইমশিয়াত।
Leave a Reply