গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ১০ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শামীম প্রধান (৩০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। গত ২২ অক্টোবর সকালে শ্রীপুর পৌরসভার মাধখলা এলাকায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শামীম প্রধান বর্তমানে পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভুক্তভোগী শিশুটি জানায়, অভিযুক্ত শামীম প্রধান দীর্ঘ প্রায় দুই মাস ধরে তাকে মাদ্রাসায় যাওয়া-আসার পথে হাত ধরে টানাটানি, স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়া এবং জোরপূর্বক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করে যৌন হয়রানি চালিয়ে আসছিলেন।
ঘটনার দিন, গত ২২ অক্টোবর সকাল ৬টার দিকে, শ্রীপুর পৌরসভার মাধখলা এলাকার জনৈক ফজলুর রহমানের নির্মাণাধীন চারতলা ভবনের নিচতলায় শিশুটিকে ধর্ষণ করেন শামীম।
ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর অসুস্থ অবস্থায় শিশুটি মাদ্রাসার শিক্ষিকার কাছে বিষয়টি খুলে বলে। পরবর্তীতে, গত ২৩ অক্টোবর রাতে শিশুটির বাবা শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ তা আমলে নিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রুজু করে।
ভুক্তভোগী শিশুটির বাবা, যিনি পেশায় একজন রিকশা চালক, তিনি জানান, “আমি সারাদিন রিকশা চালাই, বাসায় থাকি না। আমার স্ত্রী গার্মেন্টসে চাকরি করে। একদিন হুজুর ফোন দিয়ে জানায় আমার মেয়ের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে। আমি শামীমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যেন আর কোনো মেয়ের জীবনে এমন ঘটনা না ঘটে।”
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, শামীম প্রধান দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নারীদের সাথে হয়রানি ও নানা অপকর্মে লিপ্ত। তার যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন একাধিক নারী, এমনকি তার আপন ভাগ্নিও।
স্থানীয়রা আরও জানান, সরকার পরিবর্তনের পর শামীম বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় চলে আসেন। এতে করে একের পর এক অপরাধ করেও তিনি আইনের আওতার বাইরে থেকে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আনোয়ার বেপারী বলেন, “আমি সবসময় অপরাধীদের বিরুদ্ধে। শামীম আমার কর্মী হলেও যদি সে অপরাধ করে থাকে, তার অবশ্যই আইনি বিচার হওয়া উচিত।”
অভিযুক্তের বাবা আব্দুল কাদির বলেন, “ইতিপূর্বে কিছু ছোটখাটো ঘটনা ঘটেছিল, আমি সামাজিকভাবে বিচার করেছি। তবে এবার যদি আমার ছেলে সত্যিই অপরাধ করে থাকে, আমি নিজেই তার শাস্তি চাই।”
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বারিক বলেন, “এই ঘটনায় ২২ অক্টোবর রাতে শিশু ধর্ষণের অভিযোগ হয়। ওই রাতেই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।”
Leave a Reply