1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. admin@dailyamarsomoy.com : admin :
সাতক্ষীরা শহরের শ্রমবিক্রির হাট - দৈনিক আমার সময়

সাতক্ষীরা শহরের শ্রমবিক্রির হাট

সিরাজুল ইসলাম জেলা প্রতিনিধি
    প্রকাশিত : শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫

সূর্য তখনও আকাশে উঁকি মারেনি, আবছা অন্ধকার, কর্মব্যস্ত সাতক্ষীরা শহরের অধিকাংশ মানুষ তখনও ঘুমিয়ে। বিশেষ করে রোজার সময় বলে কথা, সেহরী শেষে নামাজের পরে অধিকাংশ মানুষ ঘুমের সাথে নিজেকে মিলিয়ে রাখে। কিন্তু তাদের চোখে ঘুম নেই, সেহরী সেরেই তারা ছুটতে থাকে কাজের সন্ধানে অনিশ্চিত যাত্রা তবে গন্তব্য নির্দিষ্টস্থানে শহরের পাকাপুল আর থানা সড়কে সংযোগস্থলের বাটা শো রুম সংলগ্ন এলাকা। প্রত্যুষে শহরতলী সহ সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন এলাকা হতে কেউ বা ছোট আবার কেউবা সাইকেলে চেপে, ঝুড়ি, কোদাল, লাফনা, দাও নিয়ে বসে আসে শ্রম বিক্রিয় অপেক্ষা। সকাল সাতটা আটটার মধ্যেই শেষ হয় শ্রম বিক্রির এই অস্থায়ী হাট। গতকাল এ প্রতিনিধি সকাল সাড়ে ছয়টায় বাটা শোরুম সংলগ্ন এলকায় কাজের অপেক্ষায়, কাজে নেওয়ার পক্ষের আগমনের প্রহর গুনছিলেন ছবের আলী, আ: হামিদ, লতিফ, মনিরুল, ওয়াজেদ, রফিফুল সহ অন্তত বিশ পঁচিশ জন। কথা হয় তাদের সাথে সকাল থেকে দুপুর বারটা। একটা পর্যন্ত যে কোন কায়িক শ্রমের জন্য তারা প্রস্তুত থাকে। চার/পাঁচ ঘন্টার কাজের বিনিময়ে তারা পান পাঁচশত টাকা, তাদের মধ্যে হতে হামিদ বলে এক শ্রমজীবী জানান আমরা পাঁচশত টাকা দাবী করি অনেক সময় নিরুপায় হয়ে তারও কম টাকায় কাজ করতে হয়। জীবন সংগ্রামে কঠিন এবং কঠোর বাস্তবতার মুখোমুখি এ সকল শ্রমজীবীরা প্রতিদিনই যে কাজ করার সুযোগ পায় তা নয়। কোন কোন দিন বেকরাত্বের অলস সময় কাটাতে হয়। স্বাবলম্বী এবং আত্মনির্ভরশীলতার দুরন্ত কারিগর এই সকল শ্রমজীবীরা দৃশত: পরমুখাপেক্ষা, দান, করুনা বা ভিক্ষার সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত করেনি, তারা কাজ করেই জীবন জীবিকা নির্বাহের অতন্ত্র প্রহরী। ক্ষোভের সাথে জানালেন তারা অনেকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ভাবটা এমনই যে আমাদের নেই, নিরুপায় আর তাই কাজে নেওয়ার আগ্রহীদের অনেকে এক/দুই শত টাকায় দিনব্যাপী খাটিয়ে নেওয়ার বেহেসেবী বায়না করে থাকে। খাওয়ার চুক্তি নয়, সকাল হতে দুপুর পর্যন্ত খাটুনী তবে মহানুভব অনেকে মানবিক বিষয়ে বিবেচনা করে দুপুরের খাওয়ার খেতে দেন। কোন দিন কাজ হয় কোন দিন হয় না। দিন শেষে যদি কাজ হয় তাহলে চাল, তরিতরকারী নিয়ে বাড়ীতে হাজির হয়, আর কাজ না হলে ঋণ দেনা করে দিন কাটে। এভাবেই চলছে সাতক্ষীরার শ্রম বিক্রিকারী শ্রমজীবী মানুষগুলোর রোজনামচা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com