তালার শালিখা কপোতাক্ষ নদের উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে অবৈধভাবে প্রতিদিন সাধারণ পথচারীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। খেশরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম লাল্টুর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। তিনি দু’জন লোক নিয়োগ করে তাদের দৈনিক মজুরি দিয়ে টাকা তোলার কাজ করাচ্ছেন। এর থেকে সরকারি কোষাগারে কোনো টাকা জমা হচ্ছে না। উপজেলা প্রশাসন থেকেও এ ঘাটের কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয় না।
সরেজমিন দেখা গেছে, একপাড়ে তালা উপজেলার খেশরা অপরপাড়ে পাইকগাছা উপজেলা রাড়ুলি ইউনিয়ন। দু’পারের প্রায় ৫৫টি গ্রামের মানুষ দৈনন্দিন কপোতাক্ষ নদের উপর শালিখা সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হচ্ছে। তালার অংশে খেশরা ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের আব্দুল জব্বার গাজী ও আলম গাজী নামে দু’জন ব্যক্তি দৈনিক মজুরিতে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সাঁকো পারাপার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে নিচ্ছে টাকা। জনপ্রতি নেওয়া হচ্ছে ৫টাকা। মোটরসাইকেল প্রতি ১০টাকা, বাইসাইকেল প্রতি ৫টাকা নেওয়া হচ্ছে। এতে প্রতিদিন ৪-৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। মাসে ১লাখ ৫০হাজার টাকা।
আব্দুল জব্বার গাজী বলেন, গত বছর ৫আগষ্টের পর থেকে আমরা এই সাঁকো থেকে টাকা উঠাচ্ছি। এ কাজে আমাদের দুজনকে দৈনিক ১হাজার টাকা দেওয়া হয়। স্থানীয় মসজিদে দেওয়া হয় ২০০টাকা। সাঁকো পারাপার বাবদ দৈনিক ২৮০০ থেকে ৩হাজার টাকা টাকা উঠানো হয়। এ টাকা খেশরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে দেওয়া হয়। তিনি এ টাকা দিয়ে কি করেন সেটা আমরা বলতে পারব না।
কাটিপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক মানুষ সহজ পথে খুলনা ও সাতক্ষীরা যাওয়ার জন্য এই সাঁকো ব্যবহার করছে। একজন মানুষ কে যেতে আসতে গুনতে হচ্ছে ১০টাকা। মোটরসাইকেল থাকলে আরও ২০টাকা দিতে হয়। এ টাকা নেওয়া নিয়ে অনেক সময় বাগবিতন্ডা হতে দেখা যায়।
শ্রীমন্তকাটি গ্রামের আবুল কালাম বলেন, একটা বাঁশের সাঁকো করতে কত টাকা খরচ হয়? তার জন্য কেনো সারা বছর টাকা তোলা হবে? যেখানে প্রতি মাসে উঠানো হচ্ছে ১লাখ ৫০হাজার টাকা। আমাদের এলাকার মানুষের কয়রা-পাইকগাছা যাওয়ার এটিই একমাত্র পথ। এতে করে সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানার জন্য খেরশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম লাল্টুকে অনেক খুঁজেও পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইলে বারবার ফোন দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ মো. রাসেল বলেন, অঘোষিতভাবে তাদেরকে সাঁকো নির্মাণ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর এটা রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের জন্য তারা জনগণের কাছ থেকে সামান্য পরিমাণ টাকা নিচ্ছে বলে আমার জানা আছে। তবে কারও সাথে জোরজবরদস্তি না করতে বলা হয়েছে।
Leave a Reply