1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. admin@dailyamarsomoy.com : admin :
সাতক্ষীরায় অর্থনীতিতে পরিবর্তন এনেছে মধু চাষ - দৈনিক আমার সময়

সাতক্ষীরায় অর্থনীতিতে পরিবর্তন এনেছে মধু চাষ

সিরাজুল ইসলাম সাতক্ষীরা শ্যামনগর প্রতিনিধি 
    প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সাতক্ষীরা সুন্দরবন উপকূলীয় জেলা হওয়ায় এখানকার উৎপাদিত মধুর খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। সুন্দরবনের ছাড়াও এখানে চাষাবাদের মাধ্যমে উৎপাদিত হচ্ছে মধু। জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মধু সরবরাহ করছেন এখানকার চাষিরা। জেলার অর্থনৈতিক পরিবর্তন এনেছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের এসব মধু চাষিরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় চলতি মৌসুমে মধু উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে দুই হাজার মেট্রিক টন। গত মৌসুমে জেলায় ১৪ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে আবাদকৃত সরিষা থেকে মধু উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ৫৩ হাজার ৫১০ মেট্রিক টন।যেখানে চলতি মৌসুমে জেলায় সরিষার আবাদ হয়েছে ১৯ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে। আবাদকৃত জমির বিপরীতে মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার মেট্রিক টন।

 

এদিকে মধু চাষিদের দাবি, সরকারি সহায়তা পেলে মধুর উৎপাদন বৃদ্ধি করে জেলা সহ দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।

 

চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে কলারোয়া ও দেবহাটা উপজেলায়। বিস্তৃত প্রান্তরের শস্য ক্ষেতের ধারে ধারে স্থাপন করেছে মধু সংগ্রহের বক্স। মধু সংগ্রহের এই কার্যক্রম সারা বছর কম বেশি চলমান থাকলেও মূলত মৌসুমী সময় হলো নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি।

চাষিরা সাধারণত মধু সংগ্রহের জন্য ব্যবহার করেন বক্স সুপার চেম্বার, বুরট, নিউক্লিয়াস প্রভৃতি বক্স। আর ফুল থেকে মধু আহরণের জন্য এপিস মেলিন্ডা প্রজাপতির অস্ট্রেলিয়ার মৌমাছি এ কাজে ব্যবহার করে থাকেন।

মধু চাষিদের তথ্য মতে, প্রতিটি বাক্সে সপ্তাহে ৪-৫ কেজি মধু সংগ্রহ করা হয়। যার পাইকারি বাজার মূল্য ২০০-২৫০ টাকা। প্রতিটি খামারী প্রায় ২শ টির মতো বাক্স তাদের আবাদি ক্ষেতে স্থাপন করে থাকেন।

সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ খামার স্থাপনের ফলে মৌমাছি দ্বারা পরাগায়নের মধ্যমে সরিষার ফলন ১০-২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। মৌচাষিরা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অব্যাহত রেখেছেন।

সাতক্ষীরা সদরের মৌ-চাষি সেলিম হোসেন বলেন, গত ১৮ বছর যাবত মধু পেশায় নিয়োজিত রয়েছি। শুরুর দিকে মাত্র চারটি বক্স দিয়ে কার্যক্রম শুরু করলেও বর্তমানে ১৫০টি বক্স রয়েছে খামারে। সাতক্ষীরার মধুর সুনাম রয়েছে দেশ জুড়ে। তাই সুনাম ধরে রাখতে সততার সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি। জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়মিত মধু সরবরাহ করছি। তবে সরকারের কোনো সহায়তা পেলে ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি করা যেত, সেক্ষেত্রে মধু উৎপাদন বৃদ্ধি করাসহ মোট চাহিদা মেটাতে বেশ সহায়ক হবে।

মৌচাষি মো. ফয়জুল্লাহ বলেন, কলারোয়া উপজেলার জয়নগর এলাকায় ১শত মৌ বক্স স্থাপন করেছি। এই মৌসুমে ৬-৭ বার মধু সংগ্রহ করা হবে। আশা করছি এখান থেকে ৬০ ড্রামের বেশি মধু সংগ্রহ করতে পারবো। প্রতি মণ সারিষা ফুলের মধু ১৪-১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হবে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশঘাটা গ্রামের সাইফুল বলেন, আমার ৫ বিঘা জমিতে বারি-৭, বারি- হাইব্রীড, সাদা ও লাল জাতের সরিষা চাষ করেছি। সরিষা খেতের পাশে মৌবক্স বসালে মৌমাছির পরাগায়নের ফলে সরিষার উৎপাদন ভালো হয়। এজন্য পাশ্ববর্তী জমিতে বেশ অনেকগুলো মধু সংগ্রহশালা গড়ে উঠেছে।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প (বিসিক) সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক গোলাম সাকলাই এই প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্পী মৌচাষিদের প্রশিক্ষণ ও ক্ষুদ্র ঋণ দিয়ে সহায়তা করে আসছে। এবার ২ হাজার মেট্রিক টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সাতক্ষীরার মধুর সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে তাই অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে এই সুনাম নষ্ট না করতে পারে সেদিকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে মৌচাষীদের বিভিন্ন বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়ার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সাতক্ষীরা উপকূলীয় জেলা হলেও বিভিন্ন ফসলের বৈচিত্র রয়েছে। এর মধ্যে সরিষা অন্যতম। মৌমাছির পরাগায়নের ফলে সরিষার ফলন ১০-২০ ভাগ বৃদ্ধি হয়। তা ছাড়া মধুর উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।

তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় মধুর উৎপাদন নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার মেট্রিক টন। উৎপাদিত মধু জেলাসহ অনেকগুলো অঞ্চলে সরবরাহ করেন চাষিরা। উৎপাদিত মধুর পাশাপাশি সুন্দরবনের মধু একইভাবে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার চাহিদা মেটায়। মৌচাষিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সহ সার্বিক সহযোগীতার বিষয়টি নিয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার হরিনগর গ্রামের মৌচাষী আক্গাজ আলী বলেন তিনি ২০০ বাক্স নিয়ে সারা বছর মৌসুমারি বিভিন্ন জেলায় মধু সংগ্রহ করে থাকেন তা থেকে তিনি মোটামুটি স্বাবলম্বী হয়েছেন, একই উপজে লার চুনকুড়িগ্রামের বাংলাদেশের একমাত্র নারী মৌচাষী করুণাড়ানি বলেন তিনি ২০ টা বাচ্চা নিয়ে এখান থেকে 20 বছর আগে মধু আহরণে নেমেছিল বর্তমান তার ৫০০ মধুর বাক্স চলমান রয়েছে তিনিও মৌসুমী আরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন ফুলের মধু সংগ্রহ করে থাকি বর্তমান আমি তা থেকে জীবনের পরিবর্তন ঘটিয়ে ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে আছে করুণা রানী ২০০৩ সালে মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তারপরেও মধু আহরণ বন্ধ করেননি তিনি জনপ্রতিনিধি থাকা অবস্থায় বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে থেকে মধু আয়রণ করেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com