দিনাজপুরের বীরগঞ্জে কয়েকদিনের তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশাকে উপক্ষো করেই জমি তৈরি করে তাতে বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করেছেন কৃষকরা। কৃষকদের আশা, আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার তারা বোরো ধানের বাম্পার ফলন পাবেন।
বোরোধান চাষীরা জানায়,গত বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে ধানের দাম বেশি। তাই উপজেলার শিবরামপুর,পলাশবাড়ী, শতগ্রাম, পাল্টাপুর, সুজালপুর, নিজপাড়া,মোহাম্মদপুর, ভোগনগর,সাতোর, মোহনপুর ও মরিচা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ইরি-বোরো ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। ফলে উপজেলার গ্রামাঞ্চল কিংবা পৌরসভার আবাদী ও অনাবাদী জমিতে ব্যাপকহারে বোরো ধান চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। প্রতিদিন ভোর রাত থাকতেই কৃষকরা শ্যালো মেশিন কিংবা পাম্পের সাহায্যে জমিতে পানি দিয়ে ধান রোপণের জন্য জমি উপযোগী করে তুলছেন বেশিরভাগ কৃষক।
লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ পদ্ধতি এখন আর চোখে পড়ে না। অধিকাংশ জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করা ও বীজতলা থেকে ধানের চারা উত্তোলন করে জমিতে রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। তবে সারা দেশে ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান আবাদ বাড়ছে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ হাজার ৫শত ৭৫ হেক্টর জমি। সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহকালে উপজেলার সুজালপুর, নিজপাড়া ,শিবরামপুর , পলাশবাড়ী,পাল্টাপুর ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে দেখা যায় ইরি-বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
এ সময় স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর জমিতে তারা বিনা ৭ ও ৮, হাইব্রিড বিধান ৭, ২৮, ২৯, ৪৯, ৫২, বায়ার কোম্পানির ধানী গোল্ড, তেজ ও পেট্রোকেম কোম্পানির পাইওনিয়ার এগ্রো-১২ জাতের ধান রোপণ করছেন।
অনেক কৃষক শ্রমিকের সঙ্গে নিজেও বোরো চারা রোপণে ব্যস্ত রয়েছেন।
উপজেলার নওপাড়া গ্রামের কৃষক বিধান চন্দ্র সহ অনেকেই জানান, এবার বিঘাপ্রতি ২০ কেজি ডেপ, ১২ কেজি পটাস, ৫ কেজি জিপসাম এবং ৫ থেকে ৭ ভ্যান গোবর সার মিশিয়ে জমিতে পানি দিয়ে কাদা তৈরি করছেন তারা। পরে বীজতলা থেকে চারা এনে সেই জমিতে রোপণ করছেন। এরই মধ্যে উপজেলায় প্রায় ২০-৩০ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ শেষ হয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম জানান, বোরো ধান রোপণের শুরু থেকে কাটা ও মাড়াই পর্যন্ত সময় লাগে ৯০ দিন। কাটা-মাড়াই পর্যন্ত বোরো চাষিদের খরচ হয় প্রায় ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। গেলো মৌসুমে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় এবারও আশায় আছেন চাষিরা।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বোরো চাষে কৃষকরা বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। তবে এ বছর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রোপণ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
Leave a Reply