দুই পাশে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওঠা নামা করতে হয় সেতুতে। নদীর মাঝখানে সেতু দাঁড়িয়ে থাকলেও ওঠা নামার জন্য নেই কোন সংযোগ সড়ক দুই বাঁশের সাঁকোই ভরসা।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নে কালী গঙ্গা নদীর উপর ২৫ লাখ ৫০ হাজার ৫৩২ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সেতুতে ওঠা নামা করতে হলে এখনো দুই বাঁশের সাঁকোই ভরসা। ফলে নির্মিত সেতুটি চরম জনদুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্ভোগের সাথে সাথে অপরিকল্পিত সেতু নির্মাণ করায় সরকারের লাখ লাখ টাকা অপচয় হচ্ছে।
নদীর তুলনায় সেতু ছোট হওয়ায় এবং সংযোগ সড়ক না থাকায় ওঠা নামা করতে হয় বাঁশের সাঁকো দিয়ে। দুই পাশে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চরম ভোগান্তি নিয়ে প্রতিদিন সেতু পারাপার হচ্ছে পাঁচ গ্রামের মানুষ। ১০ বছরেও এই দুর্ভোগের সমাধান হয়নি। দ্রুত এই ভোগান্তি সমাধানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
কুমারখালীর প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে পণ্য পরিবহন ও মানুষের যাতায়াতের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের সেতু-কালভার্ট কর্মসূচির আওতায় ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২০১২-১৩ অর্থ বছরে নির্মিত হওয়া সেতুটির দুই পাশে এখনো কোন রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। সেই সময় সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক ছাড়াই প্রকল্পের কাজ শেষ হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শালঘর মধুয়া, সাঁথপাড়া, খালপাড়া বাজারসহ আশপাশের গ্রামের মানুষ বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন। নির্মাণের কয়েকমাস পরে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান বালু দিয়ে কোন রকম সংযোগ সড়কের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু নির্মাণের পরের বছরই বন্যায় সংযোগ সড়ক ভেসে যায়। এর পরে আর সংস্কার করা হয়নি।
এখন দুই পাশে বাঁশের চরাট ব্যবহার করে কোন রকম রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় আজিজুল বলেন, সারা বছর পায়ে হেঁটে কোন রকম সেতুটি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু কৃষিপণ্য পরিবহন, ব্যবসায়ী সহ নিত্য প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে লাগেনা সেতুটি। ১০ মিনিটের পথ ৩০ মিনিট ঘুরে যেতে হয়।
তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন এভাবে রাস্তা বিহীন পড়ে আছে,তবুও কর্তৃপক্ষের নজরে আসেনা।
মাহাতাব নামে এক কৃষক বলেন, আশ-পাশের গ্রাম গুলাতে ধান,পাট,পেঁয়াজ ও শাকসবজির আবাদ হয়। কিন্তু যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কৃষকরা। অনেক সময় মাথায় ফসল নিয়ে পারাপার হওয়ার সময়ন নদীতে পড়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। রাস্তা না থাকায় আমাদের খুব কষ্ট হয়।
আমরা দ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাই। কলেজ ছাত্র আরিফ বলেন, নদীর মাঝখানে সেতুটি অনেক বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু দুই পাশে রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে চরম ভোগান্তি হয়। বর্ষা মৌসুমে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে কলেজে যেতে হয়।
এ বিষয়ে বাগুলাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল হক নবা বলেন, নদীর উপর সেতু নির্মাণ করতে হলে এক পাড় থেকে আর এক পাড় পর্যন্ত করতে হয়। আমার ইউনিয়নে যে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে তা কোন কাজেই আসেনা। সেতুটি নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
কুমারখালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার (পিআইও) সাইদুর রহমানের সরকারী মুঠো ফোন নম্বরে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ছবি ক্যাপশনঃ (সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নে কালী গঙ্গা নদীর উপর নির্মিত সেতুর ছবি তোলা।)
Leave a Reply