বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ২০২৪ এ শহিদ পরিবারের অনুকূলে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল (রাজস্ব) থেকে অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯-মে) দুপুরে জেলা পরিষদের আয়োজনে জেলা পরিষদের ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার মিলনায়তনে অনুদানের এই চেক বিতরণ করা হয়।
বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. মোহছেন উদ্দিনের পরিচালনায় চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় কমিশনার মোঃ মোখতার আহমেদ।
এ সময় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, জুলাই আন্দোলনে শহীদ, আহত এবং তাদের পরিবার সঠিক সম্মান পাবেন। তিনি বলেন, জেলা পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে চেক বিতরণে যাচাই বাছাইয়ের জন্য একটু বিলম্ব হয়েছে। এ জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি।
তিনি আরও বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে আরো ১০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্র করে দেয়া হবে। শহীদদের কবরস্থান পাকাকরণ হবে। শহীদদের পরিবারের বাড়ির কাছের রাস্তা শহীদের নাম নামকরণ করা হবে। শহীদ পরিবারকে পুর্নবাসন করা হবে। প্রত্যেক শহীদ পরিবারের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। আপনারা আমাদের অন্তরে আছেন। আপনাদের প্রতি সম্মান ও
সহানুভূতি সব সময় থাকবে।
ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই আগষ্টে নিহতদের পরিবারের সদস্যদেরকে বাসস্থান নির্মাণ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল শহীদদের জন্য একই মৌজায় আবাসন গড়তে চেষ্টা করা হচ্ছে। জমি না পাওয়ায় একই মৌজায় আবাসন করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের উদ্দোগে এই বাসস্থান নির্মাণ করে দিতে ইতিমধ্যেই ৬০ শতাংশ জমি সংগ্রহের পক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। আরো ৪০ শতক জমি সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
চেক বিতরণ সভায়, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের প্রশাসক জিয়া আহমেদ সুৃমন বলেন, শহীদ পরিবারের প্রকৃত সদস্য, বাবা, মা, স্ত্রী কিংবা সন্তান যেন সরকারের এই অনুদান পায় এবং এই অনুদান প্রদানে যেন কোন ঝামেলা না হয় সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে কিছুটা সময় লেগেছে। এ জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি।
এছাড়াও চেক বিতরণ সভায়, শহীদ শেখ শাহরিয়ারের পিতা আব্দুল মতিন, শহীদ পরিবারের সদস্য আরিফ সরকার, শহীদ পরিবারের সদস্য শহীদ সাগরের পিতা আসাদুজ্জামান আসাদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার সদস্য সচিব আলী হোসেন, আল আমিন বক্তব্য রাখেন।
সভায় শহীদ পরিবারের সদস্য, বাবা-মা, স্ত্রী -সন্তান, ভাই-বোন আহতদের পরিবারের সদস্য, আত্মীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। ৩৮ জন শহীদ পরিবারের সদস্য ও তাদের ওয়ারিশানদের নামে ৫১টি চেক বিতরণ করা হয়। বিতরণকৃত টাকার পরিমাণ ৭৬ লাখ টাকা। যে সকল শহীদ পরিবার এখন যোগাযোগ করতে পারেনি সেসকল পরিবার অফিসে যোগাযোগ করলে পরবর্তীতে তাদের দেয়া হবে বলে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য জুলাই আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানে সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে ময়মনসিংহের ৪১ জন শহীদ হয়েছেন। সভায় আগত শহীদ পরিবারের সদস্যদের ৪১জনের মাঝে ৫১টি চেক ও যাতায়াত নগদ ১ হাজার টাকা এবং দুপুরের খাবার বিতরণ করা হয়।
এছাড়া সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার তাহমিনা আক্তার, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কবির হোসেন সরদার, সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সালাম, হিসাব রক্ষক মাহমুদুর রহমান তসলিম সহ জেলা পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply