ময়মনসিংহের সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নে ইউএনও’র হঠাৎ করেই বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার(১১সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা দিকে উপজেলায় মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করণে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো নিয়মিত পরিদর্শন কাজের অংশ হিসেবে পরিদর্শনে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ,বঙ্গবন্ধু,গনিত,শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত স্বপ্নসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন অতঃপর ক্লাসও নিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম । দাপুনিয়া ডি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গোষ্ঠা কান্দাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ম,২য় ও ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একটি করে ক্লাস নিয়েছেন তিনি।সেখানে তিনি ২য় ও ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ঘণ্টাব্যাপী পড়িয়েছেন। এ সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা,ফলের নাম,মাছের নামসহ সহবিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় এবং সঠিক উত্তরদাতাকে কাট পেন্সিল,কলম,খাতা,কাটার, পেন্সিল রাবার,পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়াও শিক্ষার পাশাপাশি কেলাধুলায় আগ্রহী করে তুলতে স্কুলে ক্রিড়া সামগ্রী দেওয়া হয়। সকল শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে চকলেট দেন ইউএনও। চকলেট আর পুরস্কার পেয়ে খুশীতে আত্মহারা হন শিক্ষার্থীরা। একই দিনে তিনি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ১হাজারসহ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষ রোপন কর্মসুচীর উদ্বোধন করেন।ইউএনও মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষা হলো জাতির মেরুদন্ড,এই মেরুদন্ড শিশুকাল থেকে শক্ত করে নিতে হবে, তাই প্রাথমিক শিক্ষার গুনমান বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই কাজের অংশ হিসেবে প্রতিদিন উপজেলার কোনো না কোনো ইউনিয়নে যাচ্ছি। সময় সুযোগ পেলেই আমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ক্লাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিই, আলোচনা করি।এটা আমার খুব ভালো লাগে। তা ছাড়া এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিজের নৈতিক মূল্যবোধ সৃষ্টি, দেশ ও মানবপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এবং সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ইউএনওর ক্লাস নেওয়া প্রসঙ্গে ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থী মায়েশা আক্তার বলে, ‘স্যারের ক্লাসে খুব আনন্দ পেয়েছি। তিনি খুব মজা করে পড়িয়েছেন। ওনার কাছ থেকে আমরা অনেক নতুন বিষয় জানলাম।’অভিভাবক হাবিব মিয়া বলেন, ‘ইউএনও স্যার মাঝেমধ্যে পড়ালে আমাদের বাচ্চাদের খুব উপকার হবে। শিক্ষকদের মধ্যেও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা বাড়বে।’ডি কে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাম্মী আক্তার মিতু বলেন, ‘ইউএনও স্যারের ক্লাসে ছাত্রছাত্রীরা অনেক আনন্দ পেয়েছে। স্যার এই এক ঘণ্টা সময় তাদের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। অনেক বিষয় নিয়েই তিনি আলোচনা করেছেন।’এ ধরনের উদ্যোগে বিদ্যালয়ে জবাবদিহি বাড়বে বলে মনে করেন দাপুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ হাফিজুল ইসলাম হাফিজ। তিনি বলেন, এ রকম উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে প্রকৃত শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে নিয়মশৃঙ্খলা ও জবাবদিহি বাড়বে।ইউএনও’র এই কর্মসূচীতে সার্বিক ভাবে সহযোগীতা করেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন, দাপুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ হাফিজুল ইসলাম হাফিজ। এসময় উপস্থিত ছিলেন পাশ্ববর্তী ১১নং ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ সাইদুর রহমান সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা।
Leave a Reply