বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষ্যে ‘মাটি ও পানি : জীবনের উৎস’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের আয়োজনে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (০৫ ডিসেম্বর) সকালে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাফুজুল আলম মাসুম।মানুষ যে সকল খাবার খায় তার অন্তত শতকরা ৯৫ ভাগ উৎপাদিত হয় মাটিতে। মাটি নবায়নযোগ্য কোনো সম্পদ নয়। মাটি অবক্ষয় হলে একজন মানুষের পূর্ণ আয়ুষ্কালেও তা পুনোরুদ্ধার করা সম্ভব হয় না। তাই স্মার্ট কৃষির লক্ষ্য অর্জনে মাটি অবক্ষয় রোধে কৃষি সংশ্লিষ্ট সবাইকে একসাথে কাজ করা উচিত।আলোচনায় সভায় আরো জানানো হয়, বর্তমানে বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মাটি অবক্ষয়ের শিকার। আগামী ২০৫০ সাল নাগাদ অবক্ষয়ের এ হার ৯০% পর্যন্ত হতে পারে। তাই আমাদের দেশের মতো কৃষি নির্ভর দেশে মাটির অবক্ষয় রোধ এবং মাটির সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার বিকল্প নেই। মাটির অবক্ষয় রোধ এবং সুস্বাস্থ্য টিকিয়ে রাখতে জৈব সার প্রয়োগ, পরিমিত সেচ এবং সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার করতে প্রান্তিক কৃষকদের উৎসাহী করতে হবে।আলোচনা সভায় ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সুমনা রানী রায় তার উপস্থাপনায় জানান, ২০১৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ৫ই ডিসেম্বরকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস ঘোষণা করে। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট ২০১৫ সাল থেকে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস পালন করে আসছে। ক্ষুধামুক্ত দেশ, খাদ্য নিরাপত্তা ও অধিক পুষ্টির জন্য টেকসই কৃষিরক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর মাটির বিকল্প নেই যা অর্থনৈতিক উন্নয়ন তথা দারিদ্র্য বিমোচনে অপরিহার্য। মাটির স্বাস্থ্য ও পানির ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন।সভায় বিশেষ অতিথি ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার ড. মোছাঃ নাসরিন আক্তার বানু বলেন, মৃত্তিকা দিবস খুব কম সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের মৌলিক চাহিদার বেশ কিছু উপাদান মাটির সাথে সম্পৃক্ত যা আমরা সরাসরি মাটি থেকে পেয়ে থাকি। তাই আমাদের মাটির সুরক্ষায় আরো সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে আমাদের প্রান্তিক কৃষকদের মাটির সুরক্ষায় সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে।আলোচনা সভায় সভাপতি বলেন, মাটির সঙ্গে আমাদের কৃষি ও অর্থনৈতিক সংযোগ রয়েছে। এছাড়াও মাটি আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল। সকল উন্নয়ন কাজের মূল বিষয় মাটি। তাই মৃত্তিকা সম্পদকে দূষিত না করে এর সর্বোচ্চ ব্যবহার করা উচিত। ফসলি জমিতে বারবার একই ফসল না ফলানো। ফসলি মাটিতে জৈব সার প্রয়োগে কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে। মাটির সুরক্ষায় কৃষকদের কৃষি সম্পর্কে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলতে হবে ও তদের মাঝে কৃষি জ্ঞান বিনিময় করতে হবে।সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার রহিমা খাতুন, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোঃ আব্দুল জলিল, সিনিয়র তথ্য অফিসার শেখ মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম সহ জেলার বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা শেষে বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করা হয়। র্যালিতে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ,সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ নগরীর সাধারণ জনগণ অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনীর মাধ্যমে র্যালিটি সম্পন্ন হয়।
Leave a Reply