বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি খারাপ অবস্থা বলে জানিয়ে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য ডেঙ্গু আক্রান্তদের দেরি করে হাসপাতালে নিয়ে আসাকে দায়ী করছেন তিনি। পরিচালক বলেন, জ্বরে আক্রান্ত হলে ফার্মেসী থেকে ঔষধ কিনে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বাইরে বিভিন্নজনের পরামর্শ নেয়। যখন অর্গান আক্রান্ত হয়ে শেষ পর্যায়ে আসে তখন হাসপাতালে আসে। এ জন্য মৃত্যু বাড়ছে। পরিচালকের পরামর্শ জ্বরে আক্রান্ত হলেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। পরীক্ষা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এলে তো চিকিৎসকের পক্ষে রোগীকে সঠিক চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা যায় না। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়তে থাকার বিষয়টি ভয়াবহ না বললেও খুব খারাপ অবস্থা বলে স্বীকার করেছেন পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল। মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে বিভাগের ২টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ৬ জেলাসহ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত আরো ৪১৮ জন ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১ হাজার ১৬০ জন। মৃতরা হলেন বরিশাল নগরীর কাউনিয়ার কাঞ্চন আলী (৬০), বরগুনার আমতলী উপজেলার নুরুল আমিন (৫৫), বরিশালের বাকেরগঞ্জের আনোয়ারা বেগম (৭০), বরিশাল নগরীর সাগরদীর বাসন্তি (৫৫), বানারীপাড়া উপজেলার রুশিয়া (৫৭), মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার মনোয়ারা (৫৫) ও পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার বারেক হাওলাদার (৮০)। এর মধ্যে ৬ জন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও ১ জন গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পাঠানো তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ৭৯ জন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পটুয়াখালী হাসপাতালে ৪৭ জন পটুয়াখালীতে ৫৯ জন, ভোলায় ৪৬ জন, পিরোজপুরে ৬৫, বরগুনায় ৬৭ ও ঝালকাঠীতে ৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত ২৪ ঘন্টায় ৭ জনসহ বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জনের। বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪১ জন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ জন, বরিশাল জেলার অন্যান্য হাসপাতালে ২ জন, বরগুনায় হাসপাতালে ৫ জন, পটুয়াখালীতে ২ জন, পিরোজপুরের হাসপাতালে ৫ জন এবং ভোলায় হাসপাতালে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
Leave a Reply