1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. : admin :
পুলিশের বিভাগীয় মামলার স্বাক্ষীকে বাগে আনতে কলেজ ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলা - দৈনিক আমার সময়

পুলিশের বিভাগীয় মামলার স্বাক্ষীকে বাগে আনতে কলেজ ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলা

আল আমিন হোসেন, রাজশাহী
    প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১৬ মে, ২০২৩
পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির সংবাদ সম্মেলন করে কল রেকর্ড ফাঁস করা ও চাঁদা চাওয়ার ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বহিষ্কারসহ বিভাগীয় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রকে স্বাক্ষী করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যেন ওই কলেজ ছাত্র সত্যি ঘটনা তুলে ধরতে না পারেন, তাকে পুলিশ যেন বাগে আনতে পারে সেকারণে ওই কলেজ ছাত্রকে মিথ্যা, বানোয়াট, পুলিশের সাজানো পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দিয়েছে রাজশাহী জেলার বাঘা থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার ( ১৬ মে) রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে পুলিশের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্র আরাফাত সাঈদ ও তাঁর পরিবার।
আরাফাত সাঈদ বাঘা উপজেলার বলিহার (হাজিপাড়া) গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে। ভুক্তভোগী পরিবার ও কলেজ ছাত্র আরাফাত সাঈদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত বছর ৩০ নভেম্বর বাগমারা থানার এস আই আল ইমরান আমাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলার হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করেছিলেন। সেই ঘটনায় আমি সংবাদ সম্মেলন করে চাঁদা দাবির অডিও কল রেকর্ড ফাঁস করে দেই। সে সময় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করলে মিথ্যা মামলায় জড়াবে বলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করেছিলেন। আমি তার কথা উপেক্ষা করে সংবাদ সম্মেলন করি।
 সংবাদ সম্মেলনের পর পুলিশ কর্মকর্তার চাঁদাবাজির ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন তাৎক্ষনিকভাবে এসআই আল ইমরানকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। সেই মামলার আমি একজন সাক্ষী। চলতি মাসের ৩ মে, বুধবার বাঘা থানার এস আই মোঃ ছালজার করিম স্বাক্ষরিত নোটিশে রাজশাহী জেলার বিভাগীয় মামলা নম্বর-০৮/২০২৩, তারিখ ১১/০৪/২০২৩ আমাকে সকাল ১১ঘটিকার সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল জনাব কে,এইচ, এম এরশাদ এর অফিসে ডাকলে  আমি উক্ত দিন ও সময়ে স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এর অফিসে গেলে তার অফিসের দ্বায়িত্ব নিয়োজিত এক পুলিশ সদস্য বলেন স্যার জরুরি কাজে বাহিরে আছেন। আপনাকে পরে ডাকা হবে।এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সদর সার্কেল, রাজশাহী স্বাক্ষরিত নোটিশ রাজশাহী জেলার বিভাগীয় মামলা নম্বর-০৮/২০২৩, তারিখ ১১/০৪/২০২৩ স্বাক্ষী দেওয়ার জন্য আমাকে ১৬/০৫/২০২৩ তারিখে বেলা ১১টার সময় (আজ) মঙ্গলবার ডাকা হয়েছে। এরমধ্যে
গত ৬ মে-২০২৩ ইং তারিখে বাঘা থানায় পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় আমাকে ১৯ নম্বর আসামী করা হয়েছে। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং শিক্ষা জীবন নিয়ে শংকিত। পুলিশ কৌশল করে সাক্ষ্যদানের তারিখ পিছিয়ে আমার বিরুদ্ধে  গভীর ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলায় নাম জড়িয়ে ফাঁসিয়েছে।
আরাফাত আরো বলেন, এর আগে এসআই আল ইমরানের বিরুদ্ধ রাজশাহী জেলা পুলিশের বিভাগীয় মামলায় তার পক্ষে স্বাক্ষী না দিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে বলে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেওয়া হয়েছে। আমি পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির সংবাদ সম্মেলন  করায় পুলিশের মান ক্ষুন্ন হয়েছে মর্মে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো চেষ্টা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি আমাকে ফাঁসাতে গত ৬ মে-২০২৩ বাঘা থানায় পুলিশ বাদি পর্নোগ্রাফি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় নাম ঢুকিয়ে দেয়। এর আগে আমার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কোনো থানায় একটি জিডি বা মামলা হয়নি। আমি একজন কলেজ ছাত্র। আমাকেসহ আমার পরিবারকে পুলিশের অব্যাহত হুমকি ধামকিসহ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো চেষ্টা চলছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার প্রার্থনা করছি।
এ বিষয়ে তিনি পুলিশের আইজিপিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরাফাতে পরিবার আরও বলেন, পুলিশ রেকর্ডে তাঁর নাম রাখতে এমন ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রদান করা হয়েছে। যাতে পর্ববর্তীতে আরও মামলা দিয়ে হয়রানি করা যায়। তখন পুলিশই রেফারেন্স দিবে এর আগেও তার বিরুদ্ধে মামলা ছিলো। এভাবেই কত পরিবার চোখের সামনে একের পর এক মামলায় শেষ হয়ে গেলো বলে উল্লেখ করেন তাঁরা।
জানতে চাইলে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খায়রুল ইসলাম বলেন, পুলিশ কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেইনি। আর যে ছেলে পুলিশের বিরুদ্ধে কথা বলছে সে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। ঐ ছেলে বিরুদ্ধে পুর্বের কোন মামলা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।
পরে বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে এ বিষয়ে রাজশাহী জেলার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, মামলা হলে সবাই এমন বলে, তদন্ত করলে বোঝা যাবে। বহিষ্কৃত পুলিশের বিভাগীয় মামলার  অন্যতম সাক্ষিকে বাধা হচ্ছে উল্লেখ করলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান এবং আমার কোন পুলিশকে বহিষ্কার করা হয়নি বলে ফোন কেটে দেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com