1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. : admin :
নাটোরে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গাঁওয়ালী শিরনি উৎসব অনুষ্ঠিত - দৈনিক আমার সময়

নাটোরে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গাঁওয়ালী শিরনি উৎসব অনুষ্ঠিত

রতন আলী , নাটোর প্রতিনিধি
    প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৫
নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপাতিয়ার ইউনিয়নে হয়ে গেল প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী গঁাওয়ালী শিরনি উৎসব। সোমবার দিনব্যাপী ভাতুরিয়া গ্রামে এই উৎসবে অংশ নেয় ২৬ সমাজের ৪৬০টি পরিবারের প্রায় ১,৭০০ মানুষ। অনুষ্ঠানকে ঘিরে গ্রামে আসেন দূর-দূরান্ত থেকে জামাই-মেয়ে-নাতি-নাতনীসহ স্বজনরা।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ২০০ বছর আগে নাটোরের ভাতুরিয়া গ্রামে ডায়রিয়া ও কলেরা রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। অনেক মানুষ মারা যান সেই রোগে। এরপর আতাব্দি ফকির নামে এক আলেম গ্রামে শিরনি করার পরামর্শ দেন। পরে শিরনি উৎসবের পর গ্রামবাসীরা ধীরে ধীরে সুস্থ্য হয়ে ওঠেন। কিছুদিন পর একইভাবে গবাদী পশুও আক্রান্ত হলে একই ভাবে খিরশিরনি উৎসব পালন করা হয়। এরপর ওই প্রাদুর্ভাব থেকেও রক্ষা পায় গ্রাম। সেই বিশ্বাস থেকেই যুগের পর যুগ হয়ে আসছে শিরনি উৎসব।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নাদিম মাহমুদ জানান, প্রতিটি সমাজে একই দিনে এই শিরনি জন্য জনপ্রতি ২০০ টাকা ও ৫০০ গ্রাম চাল দিয়ে উৎসবে অংশ নেন গ্রামবাসী। পরিবারের সদস্য ও আগত আত্মীয়দের সংখ্যা ভেদে ৮-১০টি পর্যন্ত ভাগ দেন পরিবারের কর্তারা। সমাজের সকল টাকা ও চাল উত্তোলন শেষে একই দিনে আয়োজন করা হয়েছে গঁাওয়ালী শিরনি উৎসব। বড় বড় ডেকচিকে রান্না হয় শিরনি। উৎসবকে কেন্দ্র করে বসে নানা খাবার আর খেলনা সামগ্রীর দোকান। উৎসব উপলক্ষ্যে জামাই-মেয়ে-নাতি-নাতনীসহ স্বজনদের আমন্ত্রণ জানায় গ্রামবাসি।
দিঘাপতিয়া পিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম আনোয়ার জানান, সেই ২০০ বছর আগ থেকে এখন পর্যন্ত গ্রামবাসী প্রতিবছর দুবার এই উৎসব পালন করেন। প্রতি শীতকালে ঝাল এবং আষাঢ় মাসে মিষ্টি শিরনি করা হয়।
সাবিনা ইয়াসমিন ও সেলিম ইমতিয়াজ জানান, গাঁওয়ালী উৎসবে ঈদের চেয়েও বেশি আনন্দ হয়।
গ্রামের তরুণ আলামিন হোসেন বলেন, এ উৎসবকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন। উৎসবে আসা আত্মীয় এবং বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করা হয়। উৎসবকে কেন্দ্র করে বসেছে নানা খাবার আর খেলনা সামগ্রীর দোকান।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, ২০০ বছর আগ থেকে আজ পর্যন্ত গ্রামবাসী প্রতিবছর দুইবার এই উৎসব পালন করেন। উৎসবকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীদের মধ্যে তৈরি হয় ভাতৃত্বের বন্ধন। উৎসবে আগত আত্মীয় আর বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করা হয়। এই গ্রামের দেখাদেখি এখন আশেপাশের গ্রামগুলোতেও অনুরুপ গাঁওয়ালী শিরনির আয়োজন করা হয়। এই উৎসবে অংশ নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী, বিএনপির  কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ জনপ্রতিনিধিরা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com