বর্ষা মৌসুম এলেই অতিরিক্ত বৃষ্টিতে দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে লালপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার দুই শতাধিক কৃষকের প্রায় ৫০০ বিঘা জমির ধান তলিয়ে যেত পানির নিচে। বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে ছুটে যান বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রাসেল। পরে এলাকাবাসীদের সাথে আলোচনা করে একটি খাল খনন করে প্রাথমিকভাবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেন। স্থানীয়রা জানান, বড়াইগ্রামের গোপালপুর ইউনিয়নের মৃধা কচুয়া এলাকায় একটি সরকারী কালভার্টের মুখ বন্ধ করে একজন কৃষক তার জমিতে মাটি ভরাট করার কারণে মৃধা কচুয়াসহ পাশের লালপুরের মাঝগ্রাম বিলের পানি বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণের ফলে দুটি বিলের পানি জমে ধান ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়। খবর পেয়ে ইউএনও আবু রাসেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে তিনি প্রায় চারশ মিটার খাল কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোরহান উদ্দিন মিঠু, গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক, বড়াইগ্রাম ও লালপুর, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার, বড়াইগ্রাম উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ অহিদুল হক সরকার, বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পি কে এম আব্দুল বারি, বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় প্রেসক্লাবের প্রচার প্রকাশনা বিষয়ক মোঃ শাহাবুদ্দিন ইসলাম শিহাব, বড়াইগ্রাম ও লালপুরের মাঝগ্রাম এলাকার কৃষকরা বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে এলেই বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হয়ে বিলে আমাদের ধান ডুবে যাচ্ছিল। অবশেষে প্রশাসন নালা কেটে পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ গ্রহণ কারণে আমাদের ধানগুলো আমরা ঘরে তুলতে পারবো এবং দীর্ঘদিনের এই জনদুর্ভোগ থেকে আমরা মুক্তি পেলাম এজন্য বড়াইগ্রাম উপজেলা প্রশাসনকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এবিষয়ে বড়াইগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, মৃধা কচুয়া এলাকায় কালভার্টের মুখ আটকে দেয়ায় লালপুর ও বড়াইগ্রাম উপজেলার প্রায় ৫শ’ বিঘা জমির ধান ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। পরে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নালা কেটে জমে থাকা বৃষ্টির পানি বের করায় এসব ধানের আর ক্ষতির আশঙ্কা নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রাসেল জানান,লালপুর উপজেলার দুয়ারিয়া ইউনিয়নের মাঝগ্রাম এবং বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কচুয়া বিলে প্রায় দেড় যুগ ধরে বর্ষা মৌসুম এলেই জলবদ্ধতা তৈরি হয়ে প্রায় ৫০০ বিঘার ধান নষ্ট হয়ে যেত। এই মাঠের পানি পার্শ্ববর্তী লাগোয়া বড়াইগ্রাম উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কচুয়া ও দৌলতপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে বের হওয়ার জায়গা ছিল। পানি বের হওয়ার কালভার্ট বন্ধ অবস্থায় ছিল তাই প্রাথমিক অবস্থায় এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় পানি বের করে দেওয়ার কারণে ধানগুলো রক্ষা পায়, তবে সেখানে কালভার্টের পানি যেন বের হতে পারে, সেজন্য স্থায়ীভাবে পাকা ড্রেন নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply