চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা নেভাল সি বিচ থেকে আউটার রিং রোড হয়ে ফৌজদারহাট মুখ পর্যন্ত প্রায় ৫০-৬০ টি চোরাই তেল বিক্রির স্পট রয়েছে, এ ছাড়া ও আরো বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু দোকান রয়েছে।এ দোকান গুলো বেশিরভাগ নগরীর পতেঙ্গা থানা, ইপিজেড থানা, বন্দর থানা হালিশহর থানা, পাহাড় তলী থানা সহকারে ফৌজদারহাট মুখের কিছু দোকান সিতাকুন্ড থানাধীন রয়েছে, এছাড়াও চট্রগ্রাম শহরের বিভিন্ন জায়গায় শত শত চোরাই দোকানে যানবাহন (লরি, কাভার্ড ভ্যান, ট্রাক , তেলের গাড়ি পদ্বা , মেঘনা, যমুনা) থেকে প্রতিদিনই চুরি হচ্ছে শত শত লিটার জ্বালানি তেল। এ চোরাই দোকানে দিনের বেলা সাধারণত ছোটখাটো কেনাবেচা হয় আর রাত বারোটার পর বড় ধরনের কেনাবেচা চলে তেলের। অজ্ঞাত কারণে এখন পর্যন্ত চোরাই তেলের ব্যবসা জমজমাট চলছে , এবং নতুন ব্যবসায়ীর সংখ্যা বাড়ছে । বিভিন্ন সূত্র থেকে এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জানা গেছে স্থানীয় প্রশাসনের নামে অসাধু কিছু কর্মকর্তা এটার নিয়মিত ভাগ বাটোয়ারা পেয়ে থাকে, তার সাথে বিভিন্ন কুচক্রী ও ধান্দাবাজ লোক সহকারে স্থানীয় ছিঁচকে মাস্তান ও রয়েছে। কিছু টাকা বাঁচাতে এই তেলগুলো কিনছে বিভিন্ন রেন্ট এ কার, প্রাইভেট কার মাইক্রোবাসের ড্রাইভাররা এবং আরো বিভিন্ন অপকৌশলের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে এ তেল।
এবার আসি মূল কথায় একজন ব্যবসায়ী যদি ( ডিজেল , পেট্রোল , অকটেন ) এই ধায্য পদার্থ বিক্রি করতে চায় সর্বপ্রথম তাদের যে কাগজপত্র গুলো লাগবে তা হলো : ১। ট্রেড লাইসেন্স ২। বিস্ফোরক লাইসেন্স ৩। ফায়ার লাইসেন্স ৪। এজেন্সি লাইসেন্স ৫। ডিসি পার্মিশন। কিন্তু যেখানে এতগুলো কাগজ প্রয়োজন সেখানে তাদের একটি কাগজও আছে কিনা সন্দেহ এবং কোন কোন চোরাই দোকানি তো স্পষ্টই জানিয়েছেন তাদের কিছুই নেই। বেড়ীবাধ সংলগ্ন কিছু ঝুপড়ি দোকান বা টং দোকান থেকে ডিজেল পেট্রোল অকটেন বিক্রি হয় তারা সাধারণত পর্দাওয়ালা ( যেসব দোকানে কাপড়ের বাউন্ডারি তৈরি করে গাড়ি থেকে নামিয়ে চোরাই তেল ক্রয় করা হয় ) চোরদের কাছ থেকে তেল ক্রয় করে থাকে , তবে এইসব দোকানের আশেপাশে যে দোকানগুলো রয়েছে সেই সব দোকানগুলো সব সময় ঝুঁকির মধ্যে থাকে, কারণ ছোটখাটো দুর্ঘটনা থেকে যে কোন মুহূর্তে আগুন লেগে আশেপাশের সবকিছু পুড়ে শেষ হয়ে যেতে পারে নিমিষেই। আরেকটি গ্রুপ রয়েছে তারা শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে গ্যালন এবং ড্রামে তেল ভরে নদীতেই অবস্থান করে তারা নদীতে চলন্ত স্যালো বোট অথবা জাহাজের বলগেট ওয়ালাদের কাছে তেল ক্রয় বিক্রয় করে থাকে। এদেরও কোনো কাগজপত্র এমনকি ট্রেড লাইসেন্স ও নেই । প্রতিনিয়ত এভাবেই চোরাই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিক্রয় হচ্ছে হাজার হাজার লিটার চোরাই তেল, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ গাড়ির মালিক ও ব্যবসায়ীরা এবং সর্বশেষ বাংলাদেশ সরকার । কারণ এই তেলগুলো যদি বৈধ ভাবে বিক্রি হয় তবে সরকার বছরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব পেতো ,কিন্তু একটু অবহেলা এবং সুষ্ঠু নজরদারির অভাবে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে । এখনই যদি এই বিষয়ে সুষ্ঠু পদক্ষেপ নেওয়া না হয় তাহলে আগামীতে এর রুপ আরো ভয়াবহ হবে ,বলে দাবি সচেতন নাগরিক সমাজের ।
Leave a Reply