ঈশ্বরগঞ্জ থানার চাঞ্চল্যকর সোহেল হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং হত্যাকারী গ্রেফতার। পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ইং ২৭/১০/২০২৩ তারিখ রাত ১৯.৩০ ঘটিকায় ভিকটিম সোহেল মিয়াকে ঈশ্বরগঞ্জ থানাধীন কুর্শিপাড়া গ্রামে জনৈক মোঃ আশরাফুল আলম ওরফে সোহেল এর বাড়ীর সামনে (দক্ষিণ পাশে) অনুমান ১০০ গজ দূরে কাঁচা মাটিয়া নদীর পাড়ে কৌশলে ডেকে নিয়ে যায়। উক্ত স্থানে ডেকে নিয়ে গিয়ে একই তারিখ রাত ২০.০০ ঘটিকায় সোহেল মিয়ার ঘাড়ের পেছনে দা দিয়ে এলোপাথারিভাবে কুপিয়ে আঘাত করতঃ হত্যা করে।এই ঘটনার প্রেক্ষিতে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মামলা নং-২৫, তারিখ-২৮/১০/২০২৩ ইং, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড) রুজু হয়। পুলিশ সুপার, ময়মনসিংহের নির্দেশে মামলাটি ছায়া তদন্তকালে জেলা গোয়েন্দা শাখা,ময়মনসিংহের পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ মোজাম্মেল হক সংগীয় এসআই(নিঃ) রেজাউল আমীন বর্ষন ও এসআই(নিঃ) পরিমল চন্দ্র সরকার পিপিএম ধারাবাহিকভাবে উক্ত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকারীকে গত ইং ২৮/১০/২০২৩ তারিখ ১৭.৩০ ঘটিকার সময় ঈশ্বরগঞ্জ থানাধীন শিমুলতলী বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে,আসামীর নাম ঠিকানাঃ- মোঃ কাজী রায়হান (২২),পিতা-মোঃ কাজী খোকন, মাতা-মোছাঃ মিনা খাতুন ওরফে খয়েরুন নাহার, সাং-কুমড়া শ্বাসন, ইউপি-মাইজবাগ, থানা-ঈশ্বরগঞ্জ, জেলা-ময়মনসিংহ।আসামী টাইলস মিস্ত্রির কাজ করে। ভিকটিম সোহেল মিয়ার সাথে আসামীর দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক। প্রায় ০২ মাস পূর্বে সোহেল মিয়ার কাছ থেকে ৭০,০০০/-(সত্তোর হাজার) টাকা হাওলাত নেয়। ভিকটিম সোহেল প্রায়ই আসামীকে পাওনা টাকার জন্য চাপ দিতো। এতে করে ভিকটিম সোহেলের সাথে আসামীর বন্ধুত্ব নষ্ট হতে থাকে। পরবর্তীতে বিভিন্ন জনের নিকট হইতে ধার দেনা করে ও সুদের উপরে সোহেল মিয়ার পাওনা ৭০,০০০/-(সত্তোর হাজার) টাকা পর্যায়ক্রমে কিছুদিন পর পর অল্প কিছু করে পরিশোধ করতে থাকি। কিন্তু পাওনা ৭০,০০০/-(সত্তোর হাজার) টাকা সম্পূর্ণ পরিশোধ করে দেওয়ার পরেও ভিকটিম সোহেল আসামীকে সুদের উপরে আরো কিছু টাকা তাকে এনে দেয়ার জন্য বিভিন্ন সময় চাপ দিতে থাকে। ঘটনার প্রায় ১০ দিন পূর্বে ভিকটিম সোহেল আসামীকে বলে তুই টাকা দিতে না পারলে তোর কিডনী বিক্রি করে দিবো বলে আসামীকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। এই ভাবে কিছুদিন পর পর ভিকটিম সোহেল আসামীর কিডনী বিক্রি করে দিবে বলে ভয়ভীতি দেখাতে থাকলে একপর্যায়ে ভিকটিম সোহেলের প্রতি আসামীর প্রচন্ড রাগ ও ক্ষোভের জন্ম হয়। এই রাগ ও ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে সোহেলকে আসামী হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মোতাবেক ইং ২৭/১০/২০২৩ তারিখ রাত অনুমান ০৮.০০ ঘটিকার সময় আসামীর ফুফুর বাড়ী কুর্শিপাড়া কাঁচামাটিয়া নদীর উত্তর পাড় হইতে টাকা নিয়ে দেওয়ার কথাবলে কৌশলে সোহেলকে ডেকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই এবং ধারালো দা দিয়ে পিছন থেকে ঘাড়ে ও মাথার পিছনে এলোপাথারি ভাবে কুপিয়ে সোহেলের মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে আসামী বাড়ীতে চলে যায়।মামলার মূল রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। উক্ত আসামীকে অদ্য ইং ২৯/১০/২০২৩ তারিখ বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট” ৪নং আমলী আদালতে সোর্পদ করা হলে, উক্ত আসামী লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের বর্ণনা দিয়ে বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
Leave a Reply