কক্সবাজারে টেকনাফে পাহাড় কেটে নতুন গড়ে উঠা রোহিঙ্গাদের বসতি সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বুধবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুড়া পাহাড়ি এলাকায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন ১৬-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ও থানা পুলিশ। এ অভিযানে নেতৃত্বে দেন টেকনাফের (২৫ ও ২৭) এর ক্যাম্প ইন-চার্জ (সিনিয়র সহকারী সচিব) খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান।
পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় অর্ধশতাধিক বসতি উচ্ছেদ করা হবে উল্লেখ করে ক্যাম্প ইন-চার্জ খানজাদা শাহরিয়ার বিন মান্নান বলেন, ‘পাহাড়ে খুব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আগত নতুন রোহিঙ্গা ঘর তৈরি করে বসবাস করছে। বৃষ্টি হলে পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কা আছে। তাই ঝুঁকি বিবেচনা করে আমরা এখানে উচ্ছেদ অভিযান করছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় রোহিঙ্গাদের এখান থেকে ক্যাম্পে তাদের ফেরত পাঠানো হবে। খুব তাড়াতাড়ি তাদেরকে বসবাসের উপযোগী জায়গা করে দেওয়া হবে। এ অভিযান এক দিনের শেষ হবে না। তবে ঝুঁকিপূর্ণ যেসব বসতি রয়েছে, সবগুলো উচ্ছেদ করা হবে।’
এ বিষয়ে হ্নীলার ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমাদের এখানে বিশাল পাহাড়ি অঞ্চলে বেশিরভাগ জায়গায় রোহিঙ্গারা বসবাস করে। এটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পুলিশ প্রশাসনসহ যৌথ অভিযানে রোহিঙ্গাদের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ বাড়িগুলো উচ্ছেদ করা হচ্ছে। যেহেতু তারা মানবিকভাবে এখানে এসেছে, তারা আশ্রয়হীন মানুষ। তাদেরকে বিকল্প কোন জায়গায় ব্যবস্থা করে, সেখানে স্থানাস্তর করা হবে। ”
তিনি বলেন, ‘মূলত তারা বিক্ষিপ্তভাবে এখানে বসে গেছে। বিষয়টি আগে জানা ছিলনা। আমরা এখন জেনেছি ঝুঁকিপূর্ণ বাড়ি গুলো দেখে, ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
পাহাড়ি উঁচু জায়গায় বসবাস করেন মিয়ানমারের বলিবাজার গ্রাম থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মো. হারুন। তিনি বলেন, ‘পাচঁ মাস আগে রাখাইন থেকে প্রাণে বাচঁতে পরিবার নিয়ে পালিয়ে এসেছি বাংলাদেশে। অনেক দিন ক্যাম্পে ক্যাম্পে ঘুর জায়গায় না পেয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। কিন্তু এখান থেকেও আমাদের সরিয়ে দিচ্ছে। আমরা এখন যাব কোথায়?
এদিকে এর আগে গত ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড় ও সংরক্ষিত বন উজাড় হয়ে যাচ্ছে। এই দুই উপজেলায় বন বিভাগের হিসাবেই প্রায় ৯ হাজার একর পাহাড় কেটে তারা বসতি স্থাপন করেছে। সরকার যেখানে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে চেষ্টা করছে, সেখানে টেকনাফে পাহাড় কেটে নতুন করে রোহিঙ্গা ক্যাম্প তৈরি বিষয়টি পরিবেশ হুমকির পাশাপাশি ক্ষুব্ধ হয়েছে এলাকাবাসী।
Leave a Reply