টাঙ্গাইলে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সড়কে সড়কে জমেছে হাঁটু পানি। বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার কারণে যান ও মানুষের চলাচল ব্যাহত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া বাড়ি থেকে তেমন বের হয়নি মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইলে প্রায় ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ।
বৃহস্পতিবার বৃষ্টির পানি জমে যাবার কারণে পৌরসভা কার্যালয়, সদর উপজেলা ভূমি অফিস, টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাব, জেলা শিক্ষা অফিসের সামনে হাঁটু পানি জমতে দেখা যায়। এছাড়া নিউমার্কেট, ভিক্টোরিয়া রোড, পার্ক বাজার, শহীদ জগলু রোড, আদালতপাড়া, থানাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
প্রাইভেটকার চালক আবীর খান বলেন, রাস্তায় পানি জমে যাবার কারণে গাড়ির ভিতরে পানি প্রবেশ করছে। বৃষ্টির পানির সঙ্গে ড্রেনেজ ব্যবস্থার দূরবস্থার কারণে ড্রেনের নোংরা পানি মিশে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছিল। যে পানি জমেছে তাতে আগামী ৬ ঘণ্টাতেও নিষ্কাশন হয় কিনা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান ডিপটি বলেন, রাস্তায় পানি থাকার কারণে কয়েকজন হোঁচট খেয়ে পড়ে গেছে। চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবে আশা করছি অতি দ্রুতই সব কিছুর সমাধান হবে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছেন দিনমজুররা। সব মিলিয়ে সাধারণ জনজীবন হঠাৎই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। রোপা আমনসহ বিভিন্ন সবজি নিয়ে দুঃচিন্তায় রয়েছে কৃষকরা।
টাঙ্গাইল পৌরশহরের রিকশাচালক কবির বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৭০০-৮০০ টাকা আয় করি। আজ সারাদিন বৃষ্টি থাকায় মাত্র আড়াইশ টাকা পেয়েছি। মালিককে টাকা দিয়ে আমার আর কিছুই থাকবে না। বৃষ্টিতে বাইরে মানুষই নাই, ইনকাম করমু কেমনে।
গালা গ্রামের ইলেকট্রনিক মিস্ত্রী আব্দুল লতিফ মিয়া বলেন, যেকোনো দুর্যোগে আমার মতো গরিব মানুষের খুব কষ্ট পোহাতে হয়। আজতো সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এছাড়াও বৃষ্টির কারণে আমার গ্রামের অনেক ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
টাঙ্গাইল আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. জামাল উদ্দিন বলেন, বুধবার বিকাল ৩টা থেকে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইলে ১০০ মিলি এর মত বৃষ্টি হয়েছে। সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি স্থলভাগে উঠে আসায় ভোর রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। এটি শনিবারের মধ্যে স্বাভাবিক হবে বলে তিনি জানান।
টানা বৃষ্টিপাতে জেলার সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশল মো. সাজ্জাদ হোসেন।
টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর বলেন, উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ হলে তখন আর কোনো ভোগান্তি থাকবে না।
Leave a Reply