1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. admin@dailyamarsomoy.com : admin :
জুলাই বিপ্লবোত্তর কৃষি খাতের সংস্কারের চাষী মজদুর সংগ্রাম পরিষদের প্রস্তাবনা পেশ - দৈনিক আমার সময়

জুলাই বিপ্লবোত্তর কৃষি খাতের সংস্কারের চাষী মজদুর সংগ্রাম পরিষদের প্রস্তাবনা পেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
    প্রকাশিত : মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫

১১ মার্চ রোজ মঙ্গলবার সকাল ১১ ঘটিকায় চাষী মজদুর সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে ১০/বি, মেহেরবা প্লাজা, ৩৩, তোপখানা রোড, পল্টন, ঢাকায় “জুলাই বিপ্লবোত্তর কৃষি খাতে সংস্কারের প্রস্তাবনা” র্শীষক এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। চাষী মজদুর সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে সাংবাদিক সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন চাষী মজদুর সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব চাষী মাসুম, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছামিউল ইসলাম রাসু, অর্থ সম্পাদক শামসুদ্দিন রহমান রাকিব, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মহসিন মিয়া প্রমুখ।

বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড কৃষি। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের ৪০% ও উত্তরাঞ্চলের ৮০% মানুষ কৃষিখাতে জড়িত। গত জুলাই বিপ্লবে কৃষক ও কৃষকের সন্তানরা ফ্রন্টলাইনে থেকে লড়াই করে জাতিকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কবল থেকে মুক্ত করেছে। তারপরও বাংলার কৃষক অবহেলিত। জুলাই বিপ্লবের পর বর্তমান অর্থবছরে ধান, পাট,সবজি,ফুলকপি,পেঁয়াজ ও আলু উৎপাদনে কৃষক ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন। বোরো ধান চাষের মৌসুমে সার সংকট দেখা দিয়েছে।  যা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য বিপদজনক।

কৃষক ও কৃষিখাতের সংকট উত্তোরণে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস ও তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্যদের বিবেচনার জন্য চাষী মজদুর সংগ্রাম পরিষদ নিম্নোক্ত স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কার প্রস্তাবনা তুলে ধরে।

সংস্কারের গুরুত্ব ও বহুমুখী দিক :
১. কৃষিকে লাভজনক উৎপাদন খাতে পরিণত করা।
২. প্রতিবছর কৃষকের প্রকৃত আয় ১০% বাড়ানো।
৩. কৃষির ভ্যালু চেইনের বিভিন্ন উপখাতে তরুণ উদ্যোক্তাদের যুক্ত করা।

সম্ভাব্য সংস্কারপথ-
স্বল্প মেয়াদী সংস্কার প্রস্তাবণা:
* স্হায়ী কৃষি কমিশন গঠন ।
* চাষের খরচের উপর ৫০ শতাংশ মুনাফা যুক্ত করে কৃষি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করা হবে।
* প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারী কৃষি পণ্য ক্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা।
* কৃষি পণ্য পক্রিয়াজাত শিল্প খাতে কর-ভ্যাট সহনীয় পর্যায়ে রাখা ।
* বিএডিসিকে পূর্ণ শক্তিতে কাজে লাগানো এবং এর মাধ্যমে কৃষি উপকরণ বণ্টন ।
* জলবায়ু সহনশীল কৃষি খাতে সরকারী বিনিয়োগ বাড়ানো।
* প্রতিটি গ্রামে জৈব সার উৎপাদনে বিশেষ উৎসাহ দেওয়া।
* ভূমিহীন কৃষক সহজে খাস জমি বরাদ্দ পায়, সেই লক্ষে বর্তমান নীতিমালা সহজ করা।
* কৃষিবিমা চালু করা হবে।

মধ্য মেয়াদী সংস্কার প্রস্তাবণা:
* জমি ব্যবহার নীতিমালা তৈরি করে কৃষি জমি রক্ষা করা।
* ভূমিহীন কৃষক, জমির মালিক ও ক্ষেতমজুরদের যৌথ উদ্যোগে গ্রামে গ্রামে কৃষি সমবায় স্থাপনে পরিকল্পনা হাতে নেওয়া।
* কৃষিখাতে তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও মূলধন সহযোগিতা প্রদান করা ।
* পেঁয়াজ,আলু  ও সবজি সংরক্ষণের জন্য অধিকহারে হিমাগার নির্মাণে সরকারী সহায়তা করা।
* কৃষকদেরকে যুক্ত করে কৃষি এলাকায় কৃষি পর্যটন  পরিকাঠামো গড়ে তোলা প্রয়োজন।
* প্রতিটি উপজেলায় সরকার, এনজিও, স্থানীয় সঞ্চয় সমিতি ও গ্রামীণ কৃষি সমবায়ের যৌথ উদ্যোগে গ্রাম উন্নয়ন ব্যাংক স্থাপন। এই ব্যাংক উপজেলার কৃষি উৎপাদনশীল কর্মকান্ডে লাভ-লোকশানের ভিত্তিতে বিনিয়োগ করবে।
* প্রতিটি গ্রামে জৈব সার উৎপাদনে বিশেষ উৎসাহ দেওয়া।
* পরিবেশ সুরক্ষা ও সেচ ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়নে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়া।

দীর্ঘ মেয়াদী সংস্কার প্রস্তাবণা:
* প্রতিটি উপজেলায় আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি নির্মাণের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে ওয়ার্কশপ স্থাপন করা।
* কৃষি প্রধান অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক কারখানা গড়ে তোলা।
* অভ্যন্তরীণ উৎস হতে গ্যাসের সরবারহ বাড়িয়ে সার উৎপাদনে স্বনির্ভর হওয়া।

সংস্কার কেন অপরিহার্য
কৃষিখাতে টেকসই অগ্রগতির জন্য ধারাবাহিক সংস্কার অপরিহার্য। কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধির ওপর দেশের আয় প্রবৃদ্ধির বড় ধরনের যোগসাজশ রয়েছে। কারণ, কৃষি খাতের প্রবৃদ্ধির সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনেকগুলো খাত। তাই এ খাতের প্রবৃদ্ধি হলে সার, সেচ যন্ত্রপাতি, কীটনাশক, প্যাকেজিং, পণ্য পরিবহন, প্রক্রিয়াকরণ, গুদামজাতকরণ, বিপণন ইত্যাদি খাতেও প্রবৃদ্ধি হয়। বিশেষ করে গরিব মানুষের আয় বৃদ্ধিতে কৃষি প্রবৃদ্ধি সরাসরি তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com