1. admin@gmail.com : দৈনিক আমার সময় : দৈনিক আমার সময়
  2. admin@dailyamarsomoy.com : admin :
কোনো মতেই কমছে না যানজট! বন্দর-পতেঙ্গা-ইপিজেড সড়কে স্থবিরতা, বিপাকে লাখো মানুষ - দৈনিক আমার সময়

কোনো মতেই কমছে না যানজট! বন্দর-পতেঙ্গা-ইপিজেড সড়কে স্থবিরতা, বিপাকে লাখো মানুষ

জাকারিয়া হোসেন চট্টগ্রাম
    প্রকাশিত : বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫

চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর, পতেঙ্গা ও ইপিজেড এলাকার গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর সড়কে যানজট এখন যেন নিত্যদিনের যন্ত্রণায় পরিণত হয়েছে। কোনোভাবেই কমছে না এই যানজট। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সড়কজুড়ে ট্রাক, লরি, কাভার্ড ভ্যান ও কনটেইনারবাহী যানবাহনের দীর্ঘ সারি যেন স্থবির করে দিচ্ছে বন্দর এলাকার জীবনযাত্রা।
ট্রাফিক বিভাগ জানিয়েছে, বন্দর এলাকায় যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ হলো— বন্দর কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা, ধীরগতির গাড়ি প্রবেশ প্রক্রিয়া এবং পর্যাপ্ত প্রবেশ গেইটের অভাব। ফলে বন্দরে প্রবেশ ও প্রস্থানমুখী পণ্যবাহী যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থাকছে।
এক ট্রাফিক কর্মকর্তার ভাষায়, “বন্দর এলাকায় প্রবেশের প্রধান গেইটগুলোতে যানবাহন প্রবেশে ভয়াবহ ধীরগতি দেখা যায়। সীমিত প্রবেশপথ এবং একাধিক চেকিং পয়েন্টের কারণে যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।”
অপরদিকে বন্দর গেইটমুখী রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক ট্রলি ও কাভার্ড ভ্যানচালক জানিয়েছেন, গেইটের সার্ভার সমস্যা, কর্মীদের অকার্যকর ব্যবস্থাপনা ও কার্যক্রমে অনিয়মিত বিরতি যানজটকে আরও তীব্র করে তুলছে।
চালকরা বলেন, “অনেক সময় সার্ভার ডাউন থাকায় গেইটে ঢুকতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। কখনো দুপুরের খাবারের সময় বা অন্য কারণে গেইটের কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এতে রাস্তায় লাইন দীর্ঘ হতে হতে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছে যায়।”
এর আগে থেকেই সীমেন্স হোস্টেল থেকে ফ্রি-পোর্ট হয়ে কর্ণফুলী ইপিজেড পর্যন্ত ম্যাক্স কোম্পানির ধীরগতির কাজ, ওয়াসা ও গ্যাস লাইনের খোঁড়াখুঁড়ি, এবং অপরিকল্পিত কনটেইনার ডিপো স্থাপনের কারণে সড়কের দুরবস্থা চরমে পৌঁছেছে। বৃষ্টিতে খাদে পানি জমে তৈরি হচ্ছে ছোট-বড় গর্ত, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে প্রতিদিনই।
এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষের অভিযোগ— প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হচ্ছে। মুমূর্ষু রোগীর অ্যাম্বুলেন্স, স্কুলবাস এবং বিমানবন্দরমুখী যাত্রীরা এই যানজটে পড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন দুই দফায় সরেজমিনে এসে রাস্তা অস্থায়ীভাবে মেরামতের উদ্যোগ নিলেও কয়েকদিনের মধ্যেই আগের অবস্থায় ফিরে যায় সড়কটি।
এ অবস্থার প্রতিবাদে ও সমাধানের দাবিতে সম্প্রতি ‘বন্দর পতেঙ্গা ইপিজেড সচেতন নাগরিক সমাজ’ নামে নতুন একটি সামাজিক সংগঠন গড়ে ওঠে। সংগঠনটি জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করে এবং বেশ কিছু দিন পূর্বে  এক মানববন্ধনের আয়োজন করেছিল।
মানববন্ধনে বন্দর থানা সিটিজেন ফোরাম”র সভাপতি ও বিএনপি নেতা আলহাজ্ব হানিফ সওদাগর বলেন, “এই যানজট এখন শুধু বন্দর নয়, পুরো নগরীর সড়ক ব্যবস্থাকেও অচল করে দিচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ মানুষ এই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড), আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও তেল সেক্টর অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে।”
মানববন্ধনের বক্তারা সল্টগোলা ক্রসিং থেকে ইপিজেড পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে পার্কিং নিষিদ্ধ করা, ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-লরির প্রবেশ সময়সূচি নিয়ন্ত্রণ, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করা এবং বন্দর গেইট সংখ্যা বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছিলেন।
তারা আরও উল্লেখ করেন, কখনও কখনও এই যানজট বিশ্বরোড মোড় থেকে বড়পোল মোড় পর্যন্ত বিস্তৃত হয়, যা পুরো বন্দরের কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন
© All rights reserved © dailyamarsomoy.com