বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভ মহালয়া ১৪ অক্টোবর (শনিবার)। এদিন থেকেই পিতৃপক্ষের শেষে দেবীপক্ষের শুরু। একই সঙ্গে শারদীয় দূর্গোৎসবের পুণ্যলগ্নেরও শুরু এদিন থেকেই। মহালয়ার মাধ্যমে দেবী দূর্গা পা রেখেছেন মর্ত্যলোকে। বছর ঘুরে আবারও উমা দেবী আসছেন তার বাপের বাড়ি।
আর ২০ অক্টোবর বোধন(ষষ্ঠী)পূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু। ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে বিদায় নেবেন দেবী। এ বছর কুষ্টিয়া জেলায় ২৫৮টি দুর্গাপূজা হবে,যা গত বছরের চেয়ে ৬টি বেশি। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দেওয়া তথ্যমতে,কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৮৩টি, দৌলতপুর উপজেলায় ১৪টি, ভেড়ামারা উপজেলায় ১১টি, মিরপুর উপজেলায় ২৬টি, কুমারখালী উপজেলায় ৬০টি ও খোকসা উপজেলায় ৬৪ টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর খোকসায় ২টি,কুমারখালী ২টি এবং ভেড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলায় ১টি করে মন্ডপ বেড়েছে। প্রতি মন্ডপে কমিটির পক্ষ হতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এছাড়া জেলা পুলিশ পূজা মন্ডপে আইনশৃঙ্খলা সুরক্ষায় ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে।
শনিবার শহরের বিভিন্ন মন্ডপে ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেকটি মন্ডপে পূজার সাজ সজ্জা চলছে। এ নিয়ে মৃৎ শিল্পের কারিগরদের মাঝে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। তাদের হাতের শৈল্পিক ছোঁয়ায় খড়,মাটি,পাট আর কাদায় তৈরি হ”েছ প্রতিমা। তাদের বানানো এসব প্রতিমা আপন রূপে দেখা দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন দেবী দুর্গা। শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় অপলক তাকিয়ে রয়েছে ১০ হাত নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দেবী দুর্গা,কার্তিক,গণেশ,লক্ষ্মী ও সরস্বতীরা। দিন-রাত পরিশ্রম করে মৃৎশিল্পীরা তাদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় তৈরি করছেন প্রতিমা। প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। এখন চলছে রং ও তুলির কাজ। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর মন্ডপগুলোকে একটু বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে।
কথা হয় শিল্পী অমিত পালের সাথে তিনি বলেন, মনের ভিতর যে দেবীকে দেখি তা যখন নিজের হাতে সামনে তৈরি করি তখন এটি এক অন্যরকম অনুভূতি লাগে।
জেলা পুরোহিত ও সেবাইত প্রশিক্ষক বাপ্পি বাগচী জানান, ১৪ অক্টোবর ভোর ৬টায় শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার আড়ম্বর। ২০ অক্টোবর দেবী মায়ের বোধনের মধ্য দিয়ে ও ২৪ অক্টোবর বিসর্জনে শেষ হবে ৫ দিন ব্যাপী এ উৎসব। এবারে দেবী দুর্গার মর্তলোকে আগমন হবে ঘোড়ায় চড়ে। আবার ফিরে যাবেন ঘোড়ায় চড়ে।
জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড.জয়দেব বিশ^াস বলেন, প্রতি মন্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার পাশাপাশি আমরা স্বেচ্ছাসেবক রাখার ব্যবস্থা করেছি।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ (ক্রাইম) জানান, শারদীয় দুর্গোৎসবকে নিরাপদ করতে জেলা পুলিশ প্রয়োজনীয় সব ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
Leave a Reply