কক্সবাজার সদর মডেল থানা ও ঈদগাঁও থানার কার্যক্রম সচল করা হয়েছে। গ্রহণ করা হচ্ছে সাধারণ ডায়েরি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্বিক নিরাপত্তায় এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে থানার দাপ্তরিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন থানার কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন সেনাবাহিনীর ১০পদাতিক ডিভিশন জিওসি ও কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল শেখ মোহাম্মদ সারওয়ার হাসান। দুপুরে থানা পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ছাত্র প্রতিনিধিদের প্রত্যাশা মতে সেনাবাহিনীর সার্বিক নিরাপত্তায় ও বাংলাদেশ আনসারের সহযোগিতায় থানার কার্যক্রম শীঘ্রই পরিপূর্ণতা পাবে।
এ সময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নুরুন্নবী, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোঃ মাহফুজুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে জিওসি কক্সবাজার সদর থানার কার্যক্রম পরিদর্শনে যান। তিনি থানার ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন দিক ঘুরে দেখেন এবং কর্মরত পুলিশের সাথে কথা বলেন। গতকাল বিকেলে সেনাবাহিনীর সহায়তায় সদর থানা সচল করা হয়।
ছয়দিন পর কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা কাজে যোগদান করায় সীমিত পরিসরে কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয়।
থানার নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি কাজ করছেন সেনাবাহিনী ও আনসার সদস্যরা।
থানায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, কম্পিউটার স্থাপনসহ কর্মকর্তারা থানার নিজ দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেছেন। এবং অচিরেই সকল কিছু কাটিয়ে উঠে পূর্ণাঙ্গভাবে থানার কার্যক্রম শুরুসহ জনগণের সেবাদান কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানিয়েছেন থানায় কর্মরতরা।
এদিকে থানার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষসহ ব্যবসায়ীদের মাঝে। কক্সবাজার পর্যটন ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান জানান- থানা পুলিশের কার্যক্রম শুরু হওয়া খুব দরকার। পুলিশের কার্যক্রম না থাকায় অপরাধীদের আস্তানায় পরিনত হয়েছে পর্যটন জোন, হোটেল মোটেল এলাকা ও গ্রাম-শহর । সেখানে যে যেমন পারছে চাঁদাবাজি, হুমকি ও টাকা আদায় করছে৷ সাধারণ মানুষ অসহায়ত্বে পড়ে গিয়েছে। পুলিশের চলমান কর্মবিরতি প্রত্যাহার হয়েছে বলে শুনেছি।। এবার তাদের দ্রুত থানায় ফেরা দরকার।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান- আমার উর্ধ্বতন কর্মকতা ও অফিসারদের সাথে কথা হচ্ছে। চেষ্টা চলছে দ্রুত সময়ের মধ্যে থানায় ফেরার জন্যে। এখন থানায় যে নাজুম অবস্থা, এসব স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। সদর থানায় আজ থেকে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হবে বলে জানান তিনি।
সেনাবাহিনী কর্মকর্তা মো. হাসান তানভীর জানান, সদর মডেল থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মানুষ এখন থেকে সেবা পাবেন। মানুষের নিরাপত্তা ও চাঁদাবাজি বন্ধে যা যা দরকার আমরা করবো। থানা থেকে লুটকৃত মালামাল ছাত্ররা বিভিন্নভাবে উদ্ধার করে আমাদের কাছে নিয়ে আসছে। আশা করছি আস্তে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
গত ৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করলে নিরাপত্তা শঙ্কায় থানার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে নিরাপদে ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। সেই সুযোগে দুর্বৃত্তরা কক্সবাজার সদর মডেল থানায় ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। সেই সাথে থানায় অবস্থিত গাড়ি ও মালামালে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় । পুরাতন পুলিশ লাইনের অবস্থা আরও ভয়াবহ। সেই থেকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত পুলিশ বাহিনী গঠনসহ সংস্কারের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছিলেন তারা।
Leave a Reply