সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধা শুকুরুননেছা অবশেষে ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বাড়ি ফিরলেন। শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে মাকে নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরেছেন। এর আগে গণমাধ্যমে তার উদ্ধার হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে ওই বৃদ্ধার ছেলে রফিকুল ইসলামের। এরপরই যশোর জেলার মনিরামপুর থেকে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ছুটে আসেন রফিকুল।

রফিকুল ইসলাম জানান, তার মা কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। এর আগেও কয়েকবার মাকে হারিয়েছেন এবং একবার এক বছর পরে মাকে খুঁজে পেয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি আমার মায়ের একমাত্র সন্তান। আমরা একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য। আমাদের গ্রামের বাড়ি খুলনা জেলার তেরখাদা। আমার মামা সরকারি চাকরি করেন। পিতাও সরকারি চাকরি করতেন। আমার মা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ফলে বাবার চাকরি চলে যায়। বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে মা আমার সাথে যশোরের মনিরামপুরে থাকতেন।

কবে থেকে মা নিখোঁজ এমন প্রশ্নে রফিকুল ইসলাম বলেন, এক মাস দশ দিন আগে আমি যশোরের মনিরামপুর থেকে গ্রামের বাড়ি খুলনার তেরখাদায় পারিবারিক একটি কাজে যাই। আমি যাওয়ার পর থেকে মা গ্রামের বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে। তার একদিন পর আমার স্ত্রী খবর দেয় মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপর আমি ছুটে যাই এবং আশপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করি কিন্তু কোথাও খুঁজে পায়নি। এরপর বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে দিয়েও মাকে খুঁজে পায়নি। হঠাৎ শুক্রবার গণমাধ্যমে সংবাদ দেখে মায়ের খোঁজ পেয়েছি। তবে, বড় বড় নদী পার হয়ে কিভাবে গহীন সুন্দরবনে পোঁছালেন, সেখানে কতদিন ছিলেন, কি খেলেন এসব বিষয়ে মা কিছুই বলতে পারছে না।

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া ওই নারীকে তার ছেলে রফিকুল ইসলাম শ্যামনগর থানা থেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের গহীন অরণ্যে বাদুজুলি খালের পাশে গাছের ডালে শুয়ে থাকতে দেখে ওই নারীকে উদ্ধার করে লোকালয়ে নিয়ে আসেন শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা এলাকার দুই জেলে।